মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটের কাছেই ইলিশের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে ‘প্রজেক্ট হিলসা’ রেস্তোরাটি। ব্যতিক্রমধর্মী স্থাপত্যশৈলীর কারণে খুব সহজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় নবনির্মিত ‘প্রজেক্ট হিলসা’। সেই সাথে দাবি করা হচ্ছে এটিই বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রেস্তোরা।

এমনিতেই বাঙ্গালির প্রিয় খাবারের তালিকায় ইলিশের স্থান উপরের দিকে, তার উপরে পদ্মার পাড়ে ইলিশের থিমে তৈরি রেস্তোরায় বসে খাওয়ার হাতছানি যদি থাকে তাহলে তা ভোজন রসিক বাঙালিকে আকর্ষণ করবে সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। বাস্তবেও হয়েছে তাই, উদ্বোধনের পর থেকেই দেশের নানা প্রান্ত হতে বহু লোক ছুটে গেছেন প্রজেক্ট হিলশায়।

তবে প্রত্যাশার পারদ নেমে যেতে খুব একটা সময় লাগেনি, একবুক প্রত্যাশা নিয়ে প্রজেক্ট হিলশায় গিয়ে হতাশ হয়েছেন অনেক ইলিশ প্রেমী। ক্রমেই প্রজেক্ট হিলশা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হওয়া আলোচনা বদলে যাচ্ছে সমালোচনায়। খাবারের মান ও দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে, সেবার মান নিয়েও রয়েছে আপত্তি।

ইতিমধ্যে প্রজেক্ট হিলশার বেশকিছু খাবারের রশিদের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে একটি আস্ত ইলিশের দাম ১,৮০০ টাকা। অথচ দেশের অন্য যেকোন রেস্তোরাতেই ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি পিস ১,২০০ থেকে ১,৪০০ টাকায় পাওয়া যায়।

শুধু তাই নয়, রেস্তোরাটিতে এক প্লেট সাদা ভাতের দাম ধরা হয়েছে ১০০ টাকা, এক বাটি ডাল ১০০ টাকা, বেগুন ভাজা প্রতি পিস ৫০ টাকা, সালাদের দাম ১৫০ টাকা ও প্রতি প্লেট খিচুড়ি ২০০ টাকা। এমনকি এক বাটি পাঁচমিশালি সালাদের দামও ১৫০ টাকা। তার উপরে সার্ভিস চার্জ রয়েছে ১০% এবং ভ্যাট ১৫%।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ এই দামকে তুলনা করেছেন ‘পকেট কাটা’র সাথে, আবার কেউ বলছেন এটি যেন এক কথায় ডেকে নিয়ে ‘বাঁশ দেওয়া’ হচ্ছে। এমনি নানা সমালোচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন সয়লাব।

‘বাংলাদেশি ফুড রিভিউয়ার’ ইউটিউব চ্যানেলের রিভিউতে বলা হয়েছে, এখানে ইলিশ খেতে হলে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে সময়, এনার্জি, টাকা আর ধৈর্য নিয়ে আসতে হবে। এমনকি ভিডিওর টাইটেলেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে প্রজেক্ট হিলশায় রান্না ইলিশের স্বাদ ও মান নিয়ে।

প্রজেক্ট হিলশার রিভিউ দিতে গিয়ে রবিন নামের আরেকজন ইউটিউবার বলেছেন- এখানে খাবারের দাম গলাকাটা, খাবারের মানও সাধারণ। রেস্তোরাটি অতিরঞ্জিত করে প্রচার করা হয়েছে, এটি এক ধরণের প্রতারণার সামিল।

মামুন হোসাইন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, এক টুকরো বেগুন ভাজার দাম ৫০/৬০ টাকা? যেখানে বাজারে এক কেজি বেগুন পাওয়া যায় ৪০ টাকায়।

প্রজেক্ট হিলসার অতিরিক্ত দামের সমালোচনায় হামিদুর রহমান সোহেল নামের একজন তো ফেসবুকে একটি আস্ত ছড়া লিখে বসেছেন।

 

এভাবেই সামাজিক গণমাধ্যম জুড়ে নানা সমালোচনা ও বাক্যবাণে প্রশ্নবিদ্ধ নবনির্মিত রেস্তোরা প্রজেক্ট হিলসা। কিছুদিন আগে ভাইরাল হওয়া কাকলি ফার্নিচারের স্লোগানের অনুকরণে কেউ কেউ বলছেন- মানে কম দামে বেশি, প্রজেক্ট হিলশা। সব মিলিয়ে বলা যায় প্রজেক্ট হিলশায় সাধারণ মানুষের মোহভঙ্গ ঘটেছে! অন্তত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সেকথাই বলছে।

সূত্র-বাংলাদেশ টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *