• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম

দেশীয় টিভি চ্যানেল থাকবে, নাকি হারিয়ে যাবে?

Reporter Name / ১২৭ Time View
Update : বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৯

সৈয়দ আশিক রহমান : আজ বিশ্ব টেলিভিশন দিবস। ১৯২৬ সালের এই দিনে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন লোগি (লজি) বেয়ার্ড (John Logie Baird) টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। যদিও উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীর গবেষণা এবং মৌলিক উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে ধাপে ধাপে টেলিভিশন আবিষ্কারের পথ তৈরি হতে থাকে এবং ১৯২৬ সালের ২১ নভেম্বর সফলতা পায়। দিনটিকে গুরুত্ব দিয়ে ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ আয়োজিত এক ফোরামে ২১ নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশে টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয় ফেরদৌসী রহমানের গাওয়া ‘এই যে আকাশ নীল হলো আজ / এ শুধু তোমার প্রেম’ গানটি সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বরে। সে সময় অনুষ্ঠান সম্প্রচার হতো ডিআইটি ভবন, বর্তমানের রাজউক ভবন থেকে। নাম ছিল পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশন। দেশ স্বাধীন হবার পর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন। যদি কিছু মনে না করেন, চতুরঙ্গ, আপনার ডাক্তার, হারজিত, সপ্তবর্ণা, আনন্দ মেলা, নতুন কুঁড়ি, ভরা নদীর বাঁকে, ইত্যাদি, মাটি ও মানুষ, সংশপ্তক, কোথাও কেউ নেই, আজ রবিবার, বহুব্রীহি, নক্ষত্রের রাতসহ বহু জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ও নাটক দর্শক-শ্রোতাদের উপহার দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত এই টেলিভিশন চ্যানেলটি। চলতি শতকের শূন্য দশকের প্রায় মধ্যভাগ পর্যন্ত টেলিভিশন নির্ভর বিনোদনের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করতো বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভি। তবে, নব্বই দশকের শেষের দিকে সেসময়ের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি খাতে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দিলে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। সত্তরের দশকে সারা দেশে যেখানে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি টিভি সেট ছিল, বর্তমানে সেখানে ক্যাবল নেটওয়ার্কে যুক্ত টিভি সেটের সংখ্যাই প্রায় ৪ কোটি।
টেলিভিশন আবিষ্কার ও বাণিজ্যিক যাত্রার পর থেকে বিনোদন আর তথ্যের এই মাধ্যমটি ধীরে ধীরে প্রায় প্রতিটি পরিবারে অন্যতম প্রধান সদস্য হিসেবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে। প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষ, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইউটিউবের এই যুগেও টেলিভিশন কেবল তার অবস্থান ধরেই রাখেনি বরং ক্রমেই সম্প্রসারিত হয়েছে এর আবেদন। বাংলাদেশে আগে শুধু একটি টেলিভিশন চ্যানেল থাকলেও গত দুই দশকে বেড়ে চ্যানেলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪টিতে। লাইসেন্স পেয়ে সম্প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি চ্যানেল। এই মাধ্যমকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে সৃজনশীল, শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ। লগ্নি করা হয়েছে হাজার কোটি টাকার পুঁজি। সরকারও এই খাত থেকে আয় করছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। কিন্তু যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা এবং বিকাশ সহায়ক নীতিমালার অভাবে এই খাতে দেখা দিয়েছে বহুমুখী শঙ্কা, মুখোমুখি হচ্ছে অসম প্রতিযোগিতার। বিশেষ করে দেশীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা বেশ কিছু ভিনদেশি টিভি চ্যানেলের অবাধ প্রবেশাধিকার এবং নিষেধাজ্ঞা থাকবার পরও বাংলাদেশের গ্রাহকদের টার্গেট করে বিদেশি চ্যানেলে বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার এবং সংকুচিত বিজ্ঞাপনের বাজারে ডিজিটাল প্লাটফর্মের ভাগ বসানোয় এই সংকট ঘনিভূত হয়েছে।
বাংলাদেশে টেলিভিশনের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা:
একটি দেশের টিভি চ্যানেল সেদেশের সংস্কৃতি ও চরিত্রের ধারক, পরিচায়ক ও মুখপাত্র। টিভি স্ক্রিনেই সেদেশের শিল্পের রূপ, মানুষের রুচিবোধ, চিন্তা, সৃষ্টিশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। বাংলাদেশেও শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বিনির্মাণ এবং বিশ্বের বুকে দেশের ও দেশীয় পণ্যের ব্রান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে টিভি চ্যানেলগুলো। সরকার প্রতিবছর চ্যানেলগুলো থেকে অর্ধ-হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি রাজস্ব আদায় করছে। এ খাতে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে লক্ষাধিক মানুষের পরোক্ষ কর্মসংস্থানের।
সাড়ে ষোল কোটি মানুষের ভোক্তা বাজারে বাংলাদেশে টেলিভিশন খাতের বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একদিকে বিনোদনের সীমিত সুযোগ, অন্যদিকে যানজটসহ নানান ভোগান্তি এড়াতে মানুষ তার বিনোদনের জন্য টেলিভিশনের উপর নির্ভরশীল। নাটক, সিনেমা, ডক্যু-ড্রামা, টক’শো, গানের অনুষ্ঠান, খেলা, চিকিৎসা ও কৃষি পরামর্শ, রান্নার অনুষ্ঠান, শিশুতোষসহ বিভিন্ন দিবস ভিত্তিক অনুষ্ঠান যেমন মানুষের বিনোদনের খোরাক যোগাচ্ছে, শিক্ষা ও সচেতনতার বিকল্প মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে; তেমনি দেশ-বিদেশের খবরা-খবরও ড্রয়িংরুমে পৌঁছে দিচ্ছে টেলিভিশন। ‘রিয়েল টাইম’-এ কোথায় কী ঘটছে তা ঘরে বসেই দেখতে ও জানতে পারছে মানুষ। প্রায় সব ক’টি টিভি চ্যানেলই তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শকের সরাসরি মতামত ও প্রশ্ন করার সুযোগ রাখছে। ফলে অনুষ্ঠানগুলো আরো বেশি প্রাণবন্ত এবং অংশগ্রহণমূলক হয়ে উঠছে। এর মধ্য দিয়ে সচেতনতা ও জনমত যেমন তৈরি হচ্ছে তেমনি জনমতের প্রতিফলনও ঘটছে। উদীয়মান অর্থনীতি ও শিল্পায়নের এ সময়ে পণ্যের পরিচিতি ও ব্র্যান্ড তৈরিতে টেলিভিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, পণ্যের প্রচারে টেলিভিশনের ওপর উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্ভরতাও বাড়ছে।

বর্তমান বাজার চিত্র:
বাংলাদেশে টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন বাজার বছরে প্রায় এক হাজার কোটি থেকে ১২’শ কোটি টাকা পর্যন্ত। এই বাজারকেই ভাগ করে নেয় বিটিবিসহ দেশের বর্তমান ৩৪টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল। নতুন আরও বেশ কয়েকটি চ্যানেল অনুমতি পেয়েছে, যারা এই বিজ্ঞাপন বাজারে ভাগ বসাবে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিজ্ঞাপনের একটি বড় অংশ আবার চলে যাচ্ছে ফেসবুক-ইউটিউবের মতো ডিজিটাল প্লাটফর্মে। যতদূর জানি, বর্তমানে চালু টিভি চ্যানেলের অর্ধেকই লোকসান গুনছে। বিজ্ঞাপনের অভাবে দুই-তৃতীয়াংশ চ্যানেল অনেকটা যুদ্ধ করেই টিকে আছে।
টিভি চ্যানেলগুলোর চ্যালেঞ্জ:
* আয়: টিভি চ্যানেলের আয়ের উৎস দুটি। ১. সাবস্ক্রিপশন বাবদ আয়। এবং ২. বিজ্ঞাপন বাবদ আয়। কিন্তু বাংলাদেশের চ্যানেলগুলো সাবস্ক্রিপশন বাবদ কোনো টাকা পায় না। ফলে বাংলাদেশের বাস্তবতায় চ্যানেলের আয় শতভাগ বিজ্ঞাপন নির্ভর। কিন্তু নানান কারণে বিজ্ঞাপনের বাজার ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে। দেশের ভোক্তাবাজার বড় হলেও নিয়ন্ত্রণ করছে গুটি কয়েক বড় বড় শিল্প গ্রুপ। এই শিল্প গ্রুপগুলোর অধিকাংশের আবার টিভি চ্যানেলের মালিকানা রয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের প্রচার বাবদ নির্ধারিত বাজেটের একটি বড় অংশই নিজের চ্যানেলে দিচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে অন্যান্য চ্যানেল। আবার চ্যানেলের মালিকানা নেই এমন অন্যান্য বড় কোম্পানি তাদের পণ্যের প্রচারে বিনিয়োগ বাড়ালেও যে হারে চ্যানেলের সংখ্যা বেড়েছে তার তুলনায় পণ্যের প্রচারে বিনিয়োগ বা বাজেট বেড়েছে খুবই নগণ্য। আগে যে টাকা ৫টি চ্যানেল পেতো, সেই টাকা এখন ভাগ হয়ে যাচ্ছে ৩৪টি চ্যানেলে। অন্যদিকে বাংলাদেশের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান দেশের ভোক্তাদের টার্গেট করে বিদেশি বিভিন্ন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অথচ ‘ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন ২০০৬’ ১৯ ধারার ১৩ উপধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, দেশের মানুষকে লক্ষ্য করে ভিনদেশি কোনো চ্যানেলে পণ্যের বিজ্ঞাপন দেয়া দ-নীয় অপরাধ। কিন্তু এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হলেও আইনের আওতায় আনার নজির দেখছি না। এরকম নানান কারণে দেশের চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনের বাজার দিন দিন সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে, চ্যানেলগুলোর আয় কমছে। যার অনিবার্য অভিঘাত হিসেবে চ্যানেলগুলো ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটছে, কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটছে।
* অসম প্রতিযোগিতা: সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেলগুলোর সুবিধা হচ্ছে তাদের শুধু দেশীয় চ্যানেলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। কিন্তু বিনোদন নির্ভর বা মিশ্র চ্যানেলগুলোকে অভ্যন্তরীণ চ্যানেলগুলোর পাশাপাশি স্টার জলসা, স্টার প্লাস, এইচবিও, স্টার মুভিজের মতো বিদেশি চ্যানেলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হচ্ছে। বিদেশি এই চ্যানেলগুলো সাবস্ক্রিপশন ফি বাবদ ভোক্তা বা দর্শকদের কাছ থেকে বিপুল আয় করছে এবং অনুষ্ঠান নির্মাণে ব্যয়ও করছে অনেক বেশি। বিদেশি কিছু চ্যানেল তাদের একটি অনুষ্ঠান নির্মাণে যে ব্যয় করে তা দেশীয় কিছু চ্যানেলের সারা মাসের আয়ের সমান। সীমিত আয়ের কারণে ব্যয় সক্ষমতার অভাবে দেশের চ্যানেলগুলো শুধু মেধা আর আন্তরিকতার জোরেই বিদেশি চ্যানেলগুলোর সঙ্গে টেক্কা দিয়ে দর্শকদের মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান উপহার দেবার চেষ্টা করছে।
* ডিজিটাল প্লাটফর্মের প্রভাব: বর্তমানে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডিজিটাল প্লাটফর্ম। স্মার্টফোনের সঙ্গে ইন্টারনেট সুলভ ও সহজলভ্য হওয়ায় মানুষ বিনোদনের জন্য গুগল-ইউটিউবে ঝুঁকছে। ইউটিউবে নাটক, সিনেমাসহ বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠান দেখছে। এ পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে শুধু ডিজিটাল প্লাটফর্মের জন্য নাটক, সিনেমাসহ বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় যে যার মতো ইউটিউব চ্যানেল খুলে বসছেন। বিজ্ঞাপন বাজারের একটি বড় অংশ এখন চলে যাচ্ছে ডিজিটাল প্লাটফর্মে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের তিনটি বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানি অনলাইনে বিজ্ঞাপন বাবদ গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দিয়েছে ৮ হাজার ৭’শ কোটি টাকারও বেশি। আবার এই মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো কোনো ধরনের অনুমোদন বা অনুমতি ছাড়াই ডিজিটাল মিডিয়া প্লাটফর্ম খুলে বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করছে, যা পুরোটাই আইন বহির্ভূত। তবে এটি একটি খণ্ডিত চিত্র। দেশের শত শত কোম্পানি বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে কত টাকা বিজ্ঞাপন বাবদ দিচ্ছে তা হিসেব করাও মুশকিল। ডিজিটাল প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন প্রচারে আপত্তি নেই। আপত্তির জায়গাটা হলো গুগল, ফেসবুক, ইউটিউবের মতো প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে কোনো অফিস নেই। বাংলাদেশে উবার, আলী-বাবার মতো অনলাইন ভিত্তিক অনেক সেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা দেশে ব্যবসা করলেও বিদেশে বসেই বিজ্ঞাপনের পুরো টাকা দিয়ে দেয় গুগল, ফেসবুক বা অন্য প্লাটফর্মে। অথচ তাদের প্রচারণার পুরোটাই চলছে বাংলাদেশের মধ্যে, বাংলাদেশের গ্রাহকদের টার্গেট করে। দেশ থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলো হাজার কোটি টাকা আয় করলেও এ খাত থেকে সরকারের আয় অত্যন্ত নগণ্য। অন্যদিকে দেশে টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বাবদ সরকার ১৫ শতাংশ ভ্যাট পায়। এর মধ্যে অগ্রিম আয়কর হিসেবে নেয় ৪ শতাংশ। প্রতিবেশী ভারতে ডিজিটাল সেবা বা বিজ্ঞাপনের ওপর ১৮ শতাংশ ট্যা* আরোপ করেছে। শুধু দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোর সুরক্ষার জন্যই নয়, বরং সরকারের রাজস্ব আয় হাতছাড়া হয়ে যাওয়া ঠেকানোর পাশাপাশি ডিজিটাল প্লাটফর্মকে সুশৃঙ্খল করার জন্যও সুপরিকল্পিত শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে।
* দুষ্টচক্র: নানা কারণে দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর আয় কমলেও ব্যয় বাড়ছে। ফলে বিজ্ঞাপন নির্ভরতা বাড়ছে, অনুষ্ঠানের মান উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে পারছে না, দর্শক হারাতে হচ্ছে, আয় কমছে। ফলে এক ধরনের দুষ্টচক্রে আটকে যাচ্ছে দেশের টেলিভিশন চ্যানেল।
* দক্ষ কর্মী ও অনুষ্ঠানের মান: দ্রুততম সময়ে চ্যানেলের সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু সে অনুযায়ী দক্ষ জনবল তৈরি হয়নি। ফলে পেশাদারিত্বের অভাব দেখা দেয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে এ খাতে। এ কথা সংবাদ কর্মীদের ক্ষেত্রে যেমনটা প্রযোজ্য তেমনি প্রযোজ্য অনুষ্ঠান কর্মী কিংবা টেকনিশিয়ানদের ক্ষেত্রেও।
বিদেশি চ্যানেলের প্রভাব:
* সম্প্রচার বৈষম্য: সাংস্কৃতিক মিথষ্ক্রিয়া একটি চলমান এবং দ্বি-পাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বাংলাদেশের চ্যানেল বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ ভারতে ডাউন-লিংক করতে বছরে লাগে ৫ থেকে ৭ কোটি রুপি আর সেদেশের চ্যানেল বাংলাদেশে ডাউন-লিংক করতে লাগে মাত্র দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। অভিযোগ আছে, কিছু চ্যানেল এই টাকাটাও দেয় না। সুতরাং সংস্কৃতির আদান-প্রদান এবং মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির নামে যা ঘটছে, তা পুরোপুরি অনৈতিক, অযৌক্তিক এবং বিপুল বৈষম্যমূলক।
* নিজস্ব সংস্কৃতির স্বকীয়তার জন্য হুমকি: বাংলাদেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা বিদেশি বহু চ্যানেল বাংলাদেশে বাছ-বিচারহীনভাবে সম্প্রচার হচ্ছে। এতে দেশের সংস্কৃতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শিশুরা বাংলা ঠিক-ঠাক শেখার আগেই হিন্দিতে কথা বলতে শিখছে। নতুন ভাষা শেখা নিশ্চয়ই ভালো, তবে নিজের ভাষা-সংস্কৃতির আগে নয়। আর আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয়ও এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, অনেক অভিভাবক খুব গর্ব করেই বলেন, তার সন্তান বাংলা বলতে পারে না, হিন্দি বলে।
* বহুজাতিক কোম্পানির বিজ্ঞাপন হারাচ্ছে: বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচারের সুযোগ থাকায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের ভোক্তাদের উদ্দেশ্য করে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। এর মধ্য দিয়ে কোম্পানিগুলো একই বাজেটে সেদেশ এবং এদেশ, উভয় দেশের ভোক্তাদের কাছে পণ্যের প্রচার করার সুযোগ পাচ্ছে এবং নিচ্ছে। আগে যেখানে কোম্পানিগুলোর শত কোটি টাকার বিজ্ঞাপন বাজেট থাকতো বাংলাদেশের জন্য, এখন তা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। এভাবে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এক ঢিলে দুই পাখি মারলেও মরছে আসলে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো।
* বিদেশি পণ্য গ্রাস করছে স্থানীয় বাজার: বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্যের প্রচারের জন্য সে দেশের টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে তারা যেমন নিজের দেশে বাজার তৈরি করছে, বিজ্ঞাপনসহ সেই চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে প্রচার হওয়ায় এদেশেও সেই পণ্যের প্রচার ঘটছে এবং বাজার তৈরি হচ্ছে। ফলে ক্ষতি ও অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।
সমাধান:
বহুমুখী সংকটের ঘেরাটোপে আটকে পড়া দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোকে বাঁচাতে হলে এর বিজ্ঞাপনের বাজারকে যেমন সুরক্ষা দিতে হবে, তেমনি চ্যানেলগুলোর আয় কেবল বিজ্ঞাপন নির্ভর না রেখে আয়ে বৈচিত্র্য আনতে হবে। এর জন্য যে উদ্যোগগুলো নেয়া দরকার:
১. পে-চ্যানেল: ফ্রি চ্যানেলের ধারণা থেকে বেরুতে হবে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পে-চ্যানেল ফর্মুলা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দেশে টেলিভিশন খাত ছাড়া আর একটি খাতও কেউ দেখাতে পারবেন না যেখানে উৎপাদক উৎপাদন করছে, ভোক্তা টাকার বিনিময়ে ভোগ করছেন কিন্তু উৎপাদক কানাকড়িও পাচ্ছে না। ২ কোটি গ্রাহক হিসেবে মাসে প্রায় ৬’শ থেকে ৮’শ কোটি টাকা ক্যাবল অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করছেন। এর একটি টাকাও দেশের কোনো টিভি চ্যানেল পায় না। চ্যানেলগুলোকে এভাবে অপেশাদারিত্ব, অযৌক্তিক এবং অনৈতিকভাবে দিনের পর দিন বঞ্চিত করা থামাতে হবে।

২. বিতরণ ডিজিটাইজ করণ: এগার বছর আগে নবম সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপান্তরের ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজও করছে। কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশে টিভি চ্যানেলের ডিস্ট্রিবিউশন হচ্ছে ‘এনালগ’ পদ্ধতিতে। দর্শকদের উন্নত মানের ও উচ্চ রেজ্যুলেশনের ঝকঝকে স্ক্রিন উপহার দেবার জন্য কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দেশের অধিকাংশ চ্যানেল নিজেদের ‘হাই ডেফিনেশন’ অর্থাৎ এইচ.ডি-তে রূপান্তর করেছে। কিন্তু এনালগ পদ্ধতিতে চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউশনের ফলে দর্শকরা এইচ.ডি’র পুরো সুবিধা পাচ্ছে না। অন্যদিকে এনালগ পদ্ধতিতে ডিস্ট্রিবিউশনের ফলে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। ডিজিটাইজ করা হলে দেশের সব ক্যাবল নেটওয়ার্ক সংযোগ গণনায় আনা সম্ভব হবে, নিশ্চিত হবে রাজস্ব, বন্ধ হবে খেয়ালখুশি মতো বিদেশি চ্যানেল ডাউন-লিংকের প্রবণতা। ডিস্ট্রিবিউশন ডিজিটাইজ করার ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আছে। সেই নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে। প্রতিবেশী ভারতের মতো এতো বড় একটি দেশ শতভাগ ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন নিশ্চিত করতে পেরেছে নীতিমালা ও আইনগত বাধ্যবাধকতা কার্যকর করার মধ্য দিয়ে। সেখানে নির্দিষ্ট ফি’র বিনিময়ে নির্ধারিত সংখ্যক চ্যানেলের বান্ডেল বা প্যাকেজ কিনতে হয়। পরিসংখ্যান বলছে, পে-চ্যানেল ও ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন পদ্ধতি বাস্তবায়নের পর ভারতে টেলিভিশনের দর্শক বেড়েছে।
৩. বিজ্ঞাপন নীতিমালা: অনুষ্ঠানের মাঝখানে কতক্ষণ বিজ্ঞাপন চলবে, বিজ্ঞাপনের রেট কী হবে ইত্যাদি বিষয়ে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে হবে। এ ব্যাপারে টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো’কে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।
৪. সাবস্ক্রিপশন ফি: বিদেশি চ্যানেলকে সাবস্ক্রিপশন ফি বাবদ একটি মোটা অংকের টাকা দেয়া হচ্ছে, শুধু বঞ্চিত করা হচ্ছে দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোকে। একটি নীতিমালার আওতায় এই বৈষম্য দূর করতে হবে।
* বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণ: বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এটা করতে হবে দেশের অর্থনীতি এবং নিজেদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, মূল্যবোধকে রক্ষা করার জন্য। নেপাল, সিঙ্গাপুরের মতো বহু দেশ আছে, যারা নিজেদের সংস্কৃতিকে সুরক্ষা দেবার জন্য ভিনদেশি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। অথচ আমরা আমাদের সংস্কৃতির ব্যাপারে এতোটাই উদাসীন যে, আকাশকে অযৌক্তিকভাবে উন্মুক্ত করে দিয়েছি, নিজেদের সংস্কৃতিকে বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিচ্ছি। ভারতের গুজরাটে অন্য কোনো প্রদেশের সিনেমা চালাতে হলে ৩৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হয়। এটা তারা করছে আঞ্চলিক সংস্কৃতিকে সুরক্ষা দেবার জন্য। আর আমরা ভিন্ন দেশ হয়েও অবারিত সুযোগ করে দিচ্ছি।
৫. দেশীয় চ্যানেলে বিদেশি কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ: সীমাবদ্ধতার একটি বাস্তবতায় বিটিভিতে বিদেশি সিরিয়াল এবং সিনেমা দেখানো শুরু হয়েছিল। সেই রেফারেন্স টেনে এখন বেসরকারি বিভিন্ন চ্যানেল তাদের সম্প্রচার সময়ের একটি বড় অংশই বিদেশি কনটেন্ট দেখাচ্ছে। এতে দেশীয় টেলিভিশন সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীরা কাজ হারাচ্ছেন, বন্ধ হচ্ছে প্রোডাকশন হাউজ। দেশের টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীদের সুরক্ষায় দেশীয় টিভি চ্যানেলে বিদেশি কনটেন্ট সম্প্রচারে একটি দূরদর্শী এবং স্থানীয় শিল্পীবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
৬. অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্য ও মান বৃদ্ধি: অনুষ্ঠানের মান বাড়াতে হবে, চ্যানেলগুলোকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য তৈরি করতে হবে তাদের উপস্থাপনা রীতিতে। গৎবাঁধা প্রেমের গল্প থেকে বেরিয়ে নাটকের নির্মাণ শৈলীতে ভিন্নতা আনতে হবে। সময়কে ধারণ করে সামাজিক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, মানবিক, মনস্তাত্ত্বিক ইস্যুগুলোকে গল্পে তুলে আনতে হবে। পরিবর্তিত বাস্তবতায় দর্শকদের চাহিদা, আগ্রহ ও রুচিকে গুরুত্ব দিয়ে অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, দর্শকের রুচি তৈরিতেও টিভি চ্যানেলগুলোর ভূমিকা রয়েছে।
৭. আইনের প্রয়োগ: দেশে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আইনের তোয়াক্কা না করে যারা বিজ্ঞাপন কিংবা বিজ্ঞাপনের নামে বিদেশে টাকা পাচার করছে তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৮. প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা: দক্ষ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যাপক বন্দোবস্ত করতে হবে। সাংবাদিক, উপস্থাপক, চিত্রনাট্যকার, গল্পকার, প্রযোজক, পরিচালক, ভিডিও এডিটর, ক্যামেরাম্যান, লাইটম্যানসহ দক্ষ টেকনিশিয়ান তৈরি করতে হবে। তা না হলে এই খাতে মেধাশূন্যতা দেখা দেবে। ইতোমধ্যে সে আলামতও স্পষ্ট।
৯. কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে: তথ্য মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরকে জরুরি ভিত্তিতে দেশের টিভি চ্যানেলগুলোকে রক্ষায় একটি সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার এবং এসব চ্যানেলের কনটেন্টের ব্যাপারে একটি শক্ত অবস্থান নিতে হবে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন প্রচার একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও আইনের আওতায় আনতে হবে।
১০. গবেষণা: সর্বোপরি, দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর বর্তমান প্রকৃত অবস্থা, প্রকৃত সংকট সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবার জন্য এবং চ্যানেলগুলোর মানোন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, সে সম্পর্কে গভীর গবেষণা করতে হবে। এজন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে অনতিবিলম্বে একটি গবেষণা সেল গঠন করতে হবে। সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে, গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নিতে হবে।

শেষ কথা:
দেশে সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের যে ব্যাপক অবক্ষয় ঘটেছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। অস্বীকার করলে বরং সংকট আরো গভীর হবে। সমাজতাত্ত্বিক ও গবেষকরা মনে করছেন এই অবক্ষয়ের পেছনে বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু অন্যতম প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে হবে। এখন সিদ্ধান্ত নেবার সময় এসেছে, আমরা আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোকে ভিনদেশি টিভি চ্যানেল আর ডিজিটাল প্লাটফর্মের আগ্রাসনের মুখে ছেড়ে দিয়ে তামাশা দেখবো নাকি নিজেদের সভ্যতা, সমাজ, শিল্প-সংস্কৃতি ও অর্থনীতির স্বতন্ত্র বিকাশের স্বার্থে দেশীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে সুরক্ষা দেয়ার পদক্ষেপ নেবো। আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশের টিভি চ্যানেলগুলোকে টিকিয়ে রাখতে না পারলে, সঠিক পথে বিকাশের সুযোগ করে দিতে না পারলে, দর্শকদের দেশীয় টিভি চ্যানেলের প্রতি আকৃষ্ট করতে না পারলে; দেশের শিল্প-সংস্কৃতি-কৃষ্টি যেমন পথ হারাবে, তেমনি অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে এ খাতের উপর প্রত্যক্ষ নির্ভরশীল ১৪-১৫ হাজার কর্মী, জীবিকা হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল কয়েক লাখ মানুষ।
লেখক: আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category


[cvct title=”COVID-19 Global Stats” label-total=”Total Cases” label-deaths=”Death Cases” label-recovered=”Recovered Cases” bg-color=”” font-color=””]

[cvct title=”Coronavirus Stats” country-code=”BD” label-total=”Total Cases” label-deaths=”Death Cases” label-recovered=”Recovered Cases” bg-color=”” font-color=””]



Fact News

Fact News theme is a complete magazine theme, excellent for news, magazines, publishing and review sites. Amazing, fast-loading modern magazines theme for personal or editorial use. You’ve literally never seen or used a magazine that looks or works like this before.

https://slotbet.online/