শনিবার ভোর ৬টা ৫ মিনিট। ঢাকার রাজপথ অনেকটা পথচারী শূন্য। এরই মধ্যে ডোরাকাটা হাফ হাতা গেঞ্জি ও লুঙ্গি পরা দুই ব্যক্তি ধীরে দৌড়াচ্ছেন। দুইজনের মধ্যে একজনের কাঁধে ছোট একটি বস্তা। এটা রাজধানীর কাকরাইলের কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি মার্কেটের দুইটি স্বর্ণের দোকানে চুরি করে দুই চোরের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য।
মার্কেটের পিছনে সার্কিট হাউস রোডে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় এই দৃশ্য ধরা পড়েছে। শুক্রবার রাতের যেকোনো সময়ে একদল চোর মার্কেটের চার তলার বাথরুমের এগজস্ট ফ্যান ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। মোহনা জুয়েলার্স ও বেস্ট অ্যান্ড বেস্ট জুয়েলারি দোকানের সাটার ভেঙে চুরির পর বাথরুমের এগজস্ট ফ্যান ভেঙে ফেলার স্থান দিয়ে চোরেরা পালিয়ে যায়। দুটি দোকান থেকে প্রায় ৬০০ ভরি সোনা এবং নগদ ৭ লাখ টাকা নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন দোকান মালিকরা।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান জানান, চুরির বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে উপকমিশনার জানান, ৬০০ ভরি সোনা ও নগদ ৭ লাখ টাকা চুরি হয়েছে বলে মালিকরা দাবি করেছেন। আমরা তাদের স্টক এবং সেলস রেজিস্ট্রার মিলিয়ে মূল হিসাবটা বলতে পারবো।
মোহনা জুয়েলার্সের মালিক নির্মল কুমার গুপ্ত ও তার ভাই তপন গুপ্ত। চুরির বিষয়ে নির্মল কুমার গুপ্ত জানান, রাতে দোকান বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা চলে যায়। সকালে এসে দোকান খুলে তারা চুরির বিষয়টি টের পায়। এমন ঘটনা কিভাবে ঘটলো বুঝতে পারছি না।
রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে চোর দুইজন ছিল। তারা মার্কেটে ঢুকেছে কীভাবে এটা আপাতত নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে তারা লুটের মালামাল নিয়ে বাথরুমের এগজস্ট ফ্যান ভেঙে সেখান থেকে বেরিয়ে গেছে। সিসিটিভি ফুটেজসহ অন্যান্য বিষয় সংগ্রহের চেষ্টা করছি। এ ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ আলামত সংগ্রহ করেছে।
সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, শনিবার ভোর ৬টা ৫ মিনিটে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির পাশে সার্কিট হাউস রোড দিয়ে দুই ব্যক্তি মৃদু দৌড় দিয়ে এলাকা অতিক্রম করছেন। এদের মধ্যে দুইজনের পরনে লুঙ্গি থাকলেও নিচে প্যান্ট পরিহিত বলে বোঝা যায়। দুইজনের পরনে ডোরাকাটা হাফহাতা গেঞ্জি। একজনের বাম কাঁধে ছোট একটি বস্তা ঝুলিয়ে দৌড় দিতে দেখা যাচ্ছে।
– ইত্তেফাক