দ্রুত সংক্রমিত করা ও মৃত্যু বাড়ার প্রেক্ষাপটে ওমিক্রন নিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশে ইতিমধ্যে দুই জনের শরীরে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। তাদের হোটেল থেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। করোনার ভয়ংকর ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন যাতে দেশে দ্রুত ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য যে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করার সুপারিশ করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সময় থাকতে সচেতন হতে হবে। ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বে ওমিক্রনে সংক্রমণের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এ কারণে বিশ্বের অনেক দেশে নতুন করে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।

ডব্লিউএইচও বলছে, করোনার একটি ধরন মহামারির গতি-প্রকৃতির ওপর বড় প্রভাব ফেলবে বলে আমরা ধারণা করছি। তবে এই ধরনটি ওমিক্রন কি না, সেটা নিশ্চিত করে এখনই বলা যাচ্ছে না।

এদিকে ব্রিটেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত ওমিক্রনে আক্রান্ত এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেন, দ্রুত হারে ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ বাড়ায় যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃত্যু আকস্মিকভাবে বেড়ে যেতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিত্সক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ব্রিটেনে এক দিনে ৪৮ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। রাশিয়ায় এক দিনে ১ হাজার ২৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে ব্রিটেন এবং রাশিয়ার নতুন আক্রান্তরা ওক্রিমন সংক্রমিত কি না, সেটা কেউ বলছে না। এটা ঠিক যে, ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে দ্রুত ছড়ায় ওমিক্রন। বর্তমানে দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কম—এই ভেবে আত্মতৃপ্তিতে ভুগলে চলবে না। যে কোনো মুহূর্তে ওমিক্রন থাবা মারতে পারে। ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। তাই সময় থাকতে সবার সতর্ক হতে হবে। সভা-সমাবেশসহ যে কোনো ধরনের জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। একই সঙ্গে করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, সময় থাকতে ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সময় ফুরিয়ে গেলে কাজ হবে না। সবার মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তিনি সারা দেশের মানুষকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ডিসি-এসপিদের নির্দেশনা দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অনুরোধ জানিয়েছেন। অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, এখন অহেতুক ঘোরাঘুরি করা যাবে না। মাস্ক পরতে হবে। এখনই গোল্ডেন সময়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *