রাজধানীর আইডিয়াল কলেজ হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার রাতে কলেজ বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। দেশরুপান্তর

আইডিয়াল কলেজ অধ্যক্ষ সূত্রে জানানো হয়, ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা পরবতী বিশ্রামের জন্য আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে ২৫ তারিখ ক্লাস বন্ধ থাকবে। ২৭ তারিখ সকাল ৯টা থেকে যথারীতি ক্লাস চলবে।হঠাৎ আইডিয়াল কলেজ বন্ধ ঘোষণা

মঙ্গলবার দুপুরে বাসে হাফ পাস কার্যকরের দাকিকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।

এ ঘটনায় সমাবেশ শেষে আইডিয়াল কলেজের রায়হান উদ্দিন মাহি নামে এক শিক্ষার্থীকে তুলে আনে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ। পাঁচ ঘণ্টার দেনদরবার শেষে ছাড়া পাওয়ার পর দুদিন আইডিয়াল কলেজ বন্ধ থাকার ঘোষণা দেয় কলেজ প্রশাসন।

হঠাৎ কলেজ বন্ধের ঘোষণায় বিব্রত শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান, হাফ ভাড়া নিয়ে একটা সমাধানে আসা দরাকার। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ করতেই ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেখানে আমাদের শিক্ষকরা আমাদের এ যৌ ক্তিক দাবি আদায়ে সহযোগিতা করার কথা। সেখানে তারা আমাদের অসহযোগিতা করছেন।

এর আগে হাফ পাসের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ছাত্ররা প্রথমে নীলক্ষেত ও পরে সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে সমাবেশ করেন। বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে ২৫ নভেম্বর আবার আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে বিরতি টানেন ছাত্ররা। তারা মিছিল নিয়ে নীলক্ষেতের দিকে যাওয়ার সময় হঠাৎ লাঠিসোঁটা নিয়ে একদল তরুণ ছাত্রদের ধাওয়া দেন। এরপর পুলিশের উপস্থিতিতে আইডিয়াল কলেজের এক ছাত্রকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনায় আইডিয়াল কলেজের ১১ শিক্ষকের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকারের সঙ্গে দেখা করেন।

সেলিম উল্লাহ খন্দকার অবশ্য কোনো ছাত্রকে আটকে রাখা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাব দেননি।

তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না, কোনো ছাত্র এখানে আছে কিনা। আমার সামনে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষকেরা আছেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা আছে। তারা বলছে, তাদের একটা মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।’

তবে আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ জসিমউদ্দীন আহমেদ সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে জানান, তারা ছাত্রটিকে ফিরিয়ে এনেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা বলেন, কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে সায়েন্স ল্যাব থেকে নিউমার্কেটের মোড় ঘুরে আবার সায়েন্স ল্যাব পর্যন্ত একটি মিছিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ওই মিছিলে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল ভাঙচুরের অভিযোগ তুলে হামলা চালান।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রথম দফা হামলার পর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা জড়ো হলে তাদের ওপর আরেক দফা হামলা করে ছাত্রলীগ। এই হামলার সময় রাস্তায় স্কুল-কলেজের পোশাক পরা সব শিক্ষার্থীকেই মারধর করা হয়। হামলার পর ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে দিতে তারা ঢাকা কলেজের ভেতরে চলে যান।

জানা গেছে, ওই ছাত্রকে প্রায় ৫ ঘণ্টা আটকে রাখার পর পুলিশ, ঢাকা কলেজ ও ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ কর্তৃপক্ষের বৈঠকে সমঝোতা হয়। এ সময় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ কর্তৃপক্ষ অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।

বৈঠকে পুলিশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ধানমন্ডি থানার ওসি (অপারেশন) ডাবলু ও কলাবাগান থানার ওসি (অপারেশন) আবু জাফর। ঢাকা কলেজের পক্ষে ছিলেন ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আরও ছিলেন ঢাকা কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর এ টি এম মঈনুল হোসেন, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মজিবুর রহমান ও ঢাকা কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. কুদ্দুস শিকদার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *