বগুড়ায় পাঁচ শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে আলমগীর হোসেন রাজা (৫২) নামে এক মুদি দোকানীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শহরের নিশিন্দারা ধমকপাড়া এলাকায় বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যৌন নিপীড়নের শিকার এক শিশুর মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন রাজার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। নির্যাতনের শিকার শিশুদের বয়স ৯ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। তারা গ্রেপ্তার রাজার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। তাতে তারা বলেছে, ‘দোকানে কেনা-কাটা করতে গেলেই আলমগীর হোসেন রাজা বিভিন্ন সময় তাদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালায়।’
বগুড়া সদর থানার নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কের কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর জেবুন নেছা জানান, সর্বশেষ যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে চার দিন আগে দুপুরে। সেদিন এক শিশু মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন রাজার দোকানে শ্যাম্পু কিনতে যায়। তখন ওই দোকানি শিশুটিকে দোকানের ভেতরে গিয়ে শ্যাম্পু নিতে বলে। শিশুটি দোকানের ভেতরে যেতেই দোকানি আলমগীর হোসেন রাজা দরজা বন্ধ করে তাকে বিবস্ত্র করতে শুরু করে। শিশুটি বাধা দিলে দোকানি তাকে চাকু দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। অনেক পীড়াপীড়ির পর শিশুটি ছাড়া পেয়ে বিষয়টি তার মাকে গিয়ে বলে।
এরপর ওই শিশুর মা মঙ্গলবার বিকেলে থানায় গিয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মুদি দোকানি আলমগীর হোসেন রাজার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর জেবুন নেছা জানান, মামলার পর পরই অভিযুক্ত মুদি দোকানীকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের নিশিন্দারা ধমকপাড়া এলাকায় বাড়ি থেকে মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন রাজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুদি দোকানীকে গ্রেপ্তারের পর পরই আরো চার শিশুর মা তাদের শিশুদের নিয়ে থানায় আসেন। এরপর সেই চার শিশুও মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন রাজার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করে।
২২ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে শিশুরা জানায়, কোরবাণীর ঈদের পর থেকে ওই মুদি দোকানী শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। শিশুরা জানায়, সকালে নয়তো দুপুরে যখন মানুষের যাতায়াত কম থাকে তখন পণ্য কিনতে দোকানে গেলেই দোকানী আলমগীর হোসেন রাজা কৌশলে তাদেরকে কাছে টেনে নিয়ে যৌন নিপীড়ন চালাতো। অসভ্য ওই আচরণের কথা কাউকে যাতে না বলা হয় সেজন্য তিনি দোকানে রাখা ছুরি দিয়ে হত্যার হুমকিও দিতেন।
সাব ইন্সপেক্টর জেবুন নেছা আরো বলেন, ভুক্তভোগী শিশুদের মায়েরা জানিয়েছেন তাদের মেয়েদের ওপর বিভিন্ন সময় মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন রাজার যৌন নিপীড়নের খবর তারা জানতেন। কিন্তু ভয় আর লোক লজ্জার কারণে তারা বিষয়টি গোপনেই রেখেছিলেন। এক প্রশ্নের জবাবে জেবুন নেছা বলেন, আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা জানান, পাঁচ শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা এবং যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আলমগীর হোসেন রাজাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।