মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর শ্রম ভবনে ঈদের বেতন-বোনাস ও ছুটি নিয়ে আরএমজি বিষয়ক পরামর্শ পরিষদের দশম সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, মালিকদের কারখানা ছুটির আগের দিনই শ্রমিকের বোনাস পরিশোধ করতে হবে। বেতন-বোনাস পরিশোধে ব্যর্থ হলে আইনের আশ্রয় নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। জাগো নিউজ

দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর মধ্যে অধিকাংশেরই জুন মাসের বেতন পরিশোধ হয়েছে। বাকিরাও দু-একদিনের মধ্যেই বেতন পরিশোধ করবে, এমনটি আশা করছে শ্রম মন্ত্রণালয়। বোনাস নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলোর শঙ্কা ছিল, সে শঙ্কাও দূর হয়েছে।

বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, মন্ত্রণালয় এর আগে নিজ উদ্যোগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস আদায় করেছে। এবার ইতোমধ্যে বেতন দেয়া শুরু হয়েছে, অধিকাংশ কারখানাই বেতন দিয়েছে শ্রমিকদের। কিছু কারখানা বাকি রয়েছে, একই সঙ্গে বোনাসও দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। কারখানা ছুটির আগেই শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে বোনাস পরিশোধ করেই কারখানা ছুটি দেবে মালিকপক্ষ।

কারখানায় ছুটি ও পরবর্তী বন্ধ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু এবার কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা অন্যবারের চেয়ে ভয়াবহ। এর আগে মৃত্যু ও আক্রান্ত কম ছিল, এবার তা ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এ অবস্থায় এবারের ঈদে কারখানার শ্রমিকরা বাড়িতে যাবেন বলেই মনে হচ্ছে।

সভায় শ্রমিক নেতা নাজমা আক্তার বলেন, বড় কারখানাগুলোতে বেতন হলেও ছোট-মাঝারি কারখানায় এখনও হয়নি। এভাবে দুই ধরনের নিয়ম হলে মানা যায় না। তাছাড়া এখন মালিকদের অর্ডার ভালো আসছে, মুনাফাও বেশি হচ্ছে। এক্ষেত্রে বেতন-বোনাসের পাশাপাশি চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি। একই সঙ্গে সব শ্রমিকের ভ্যাকসিন নিশ্চিতে মালিকপক্ষ ও সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের কথা বলেন এ নেতা।

শিল্প পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম বলেন, মালিক-শ্রমিক মিলেই আজকের এ শিল্পকে অনেক দূরে নেয়া সম্ভব হয়েছে। আপনারা একে অপরের একটা অংশ। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে যায় মালিকের অজান্তেই। এক্ষেত্রে দুর্ঘটনার পরই সব ত্রুটি উঠে আসে। আমাদের পরামর্শ থাকবে- আপনারা সরকারের নির্দেশনা মেনে কারখানা গড়ে তুলুন। শ্রমিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিন। কারণ তারা প্রায়ই রাস্তা অবরোধ করেন, এতে যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের অনেক ছোট ও মাঝারি কারখানা আছে, সবার অবস্থা একই রকম নয়। অনেকেই বেতন দিতে পারবেন কিন্তু বোনাস দিতে কষ্ট হয়। এর পরও তারা বোনাস পরিশোধ করেন। এখন অর্ডার বেশি আসছে যেমন তেমনি বিশ্বে সুতার দাম আকাশছোঁয়া, কীভাবে আমরা কারখানায় উৎপাদন টিকিয়ে রাখব?

বিকেএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে মহামারির মধ্যে বেতন-বোনাস দিচ্ছি। এ অবস্থায় অতিরিক্ত বেতন কীভাবে হবে? ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে চাই। সরকার যা চাইবে, আমরা তা মেনে নেব।

সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, বিজিএমইএ’র পরিচালক হারুনুর রশিদ, নাভিদুল হক, বিকেএমইএ’র পরিচালক মোস্তফা মনোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *