বৃহস্পতিবার রাতে ইংল্যান্ড-ডেনমার্কের ইউরোর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ফলাফল আসেনি। খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। প্রথম সেমির মতো দ্বিতীয় সেমিফাইনালও গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর এই সুযোগেই খেলার ১০৪ মিনিটে হ্যারি কেনের পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

তাতেই ২-১ গোলে স্কোরলাইন রেখে ডেনমার্ককে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো স্বপ্নের ফাইনালের টিকিট পেলো সাউথগেটের দল। আগামী ১১ জুলাই ফাইনালে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ১৯৬৮’র চ্যাম্পিয়ন ইতালি।

১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। এরপর থেকে কোন বড় প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠার স্বাদ নেওয়া হয়নি। ইউরোতে এর আগে দুইবার তৃতীয় হওয়ার রেকর্ড আছে তাদের। এই প্রথমবার ফাইনালে জায়গা করে নেওয়াটা লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে হাজারও সমর্থকদের কাছে তাই বাড়তি আনন্দ-উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ্য।
ইংল্যান্ডের মতো ডেনমার্কও চেয়েছিল ১৯৯২ সালে ট্রফি জয়ের পর ফাইনালে জায়গা করে নিতে। যেভাবে ডেনিশ রূপকথা চলছিল তাতে করে ট্রফি ছোঁয়া দূরত্বে পৌঁছে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকতো না। কিন্তু শেষ রক্ষা যে হয়নি। ইংল্যান্ডের আগ্রাসী ফুটবলের কাছে হার মানতে হয়েছে। সেমিফাইনালে থেমে গেছে ডেনিশদের পথচলা।

নিজেদের মাঠে অতিরিক্ত সময়ে ইংল্যান্ড একচেটিয়া খেলেছে। ৯৪ মিনিটে কেইনের শট গোলকিপার হাত দিয়ে কোনমতে রুখে দেন।৯৭ মিনিটে গ্রিলিশের প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়।১০২ মিনিটে জয়সূচক গোলটি আসে। রহিম স্টার্লিংকে ফেলে দেন জেনসন-মাহেলেরা। পেনাল্টির বাঁশি বেজে উঠে। পেনাল্টি থেকে হ্যারি কেইনের শট গোলকিপার বা দিকে ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দেন, কিন্তু ফিরতি বলে দৌড়ে এসে কেইন নিজেই লক্ষ্যভেদ করে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোঁটান।

এর আগে নির্ধারিত সময়ের খেলাতে বল দখলে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড। আক্রমণও কম করেনি। তবে প্রথম গোল কিন্তু ডেনমার্কই করেছে। অথচ ম্যাচ ঘড়ির ৫ মিনিটে সাউথগেটের দল এগিয়ে যেতে পারতো। কেইনের ক্রসে রহিম স্টার্লিং বক্সের ভিতরে ফাঁকায় বলের নাগাল পাননি।

১৫ মিনিটে কেইনের বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট ক্রস বারের অনেক ওপর দিয়ে দিয়ে শুধু ভীতি ছড়িয়েছে।

ডেনমার্ক কিছুটা গুছিয়ে উঠে ইংল্যান্ডকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছে।২৫ মিনিটে ড্যামসগার্ডের শট দূরের পোস্ট দিয়ে যায়। ঠিক এর ৫ মিনিট পর সিরি আতে খেলা সাম্পোদারিয়ার এই উইঙ্গারই দলকে এগিয়ে নেন।

৩০ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে জোরালো শটে জাল কাঁপান ড্যামসগার্ড। গোলকিপার পিকফোর্ড ঝাঁপিয়ে পড়েও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। এক গোলে পিছিয়ে থেকে ইংল্যান্ড আবারও আক্রমণের পসরা সাজিয়েছে।

৩৮ মিনিটে ইংল্যান্ড সুবর্ণ সুযোগ হারায়। রহিম স্টার্লিংয়ের ৬ গজ দূরত্বে থেকে নেওয়া শট গোলকিপারের শরীরে লেগে প্রতিহত হয়। পরের মিনিটে ওয়েম্বলির ইংলিশ সমর্থকদের মুখে হাসি। রহিম স্টার্লিংয়ের উদ্দেশ্যে কাটব্যাক বাড়িয়েছিলেন সাকা, কিন্তু স্টার্লিংয়ের গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা ডেনিশ ডিফেন্ডার কিয়ের ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন!

বিরতির পর পাল্টা-পাল্টি আক্রমণ কম হয়নি। তবে ইংল্যান্ড যা সুযোগ পেয়েছিল তা কাজে লাগাতে পারলে গোল ব্যবধান বাড়তে পারতো। কিন্তু তা হলো কোথায়। বরং ডেনিশরা ৫১ ও ৫৩ মিনিটে ভীতি ছড়িয়েছে। প্রথমটি দোলবার্গের শট গোলকিপার ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন। পরেরটি ব্রেথওয়েটের ক্রস পিকফোর্ড প্রতিহত করেন।

৫৫ মিনিটে ইংল্যান্ডর মাগুয়েরের হেড গোলকিপার কোনমতে রুখে দিয়ে দলকে ম্যাচে রাখেন।

এরপর ফিলিপিস একাই দুটি সুযোগ নষ্ট করেন। দুটি শটই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। শেষ দিকে তো কেইন-ফিলিপস-মন্টরা ডেনিশদের চেপে ধরেছিল। কিন্তু কিছুতেই রক্ষণ আর ভেদ করা যায়নি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *