ছয় জেলায় করোনার টিকা ফুরিয়ে গেছে। রোববার এসব জেলায় কোনো ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া হয়নি। এসব জেলায় আবার কবে টিকা দেওয়া হবে, তা জানেন না স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

গাজীপুর, রাঙামাটি, রাজশাহী, পাবনা, নড়াইল ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মতো টিকা নেই। গতকাল রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও কোনো টিকা দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া পরিসংখ্যানে করোনা টিকা পরিস্থিতি সম্পর্কে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী কয়েক দিনে এই ধরনের জেলা ও কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

দেশের অন্যান্য জেলার মতো গাজীপুরেও গণটিকাদান শুরু হয়েছিল ৭ ফেব্রুয়ারি। এ জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩ জনকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছিল। ৮ এপ্রিল থেকে জেলায় দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া শুরু হয়। গত পরশু এই জেলার টিকার মজুত ফুরিয়ে যায়। সেদিন পর্যন্ত প্রথম ডোজ পাওয়া ৯৬ হাজার ১৬১ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়। এই জেলায় ৪০ হাজার ৮৪২ জনকে টিকার দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।

দেশে এখন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করা। গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৭১ জনকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ লাখ ১৫ হাজার ৫২২ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। সরকারের কাছে টিকা মজুত আছে ৪ লাখ ডোজের কম। প্রথম ডোজ পাওয়া প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

রোববার অবশ্য ঢাকার একটি কেন্দ্রে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে ৫৯ জনকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। ২৬ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া বন্ধ করেছিল।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো. খায়রুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম ডোজ পাওয়া ব্যক্তিদের বলা হচ্ছে, টিকার জন্য ঢাকায় চাহিদা দেওয়া হয়েছে। যখনই টিকা পাওয়া যাবে, তখনই প্রথম ডোজ পাওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হবে।’

সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে করোনার টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে চীন সরকার বাংলাদেশকে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার দিয়েছে। আরও ছয় লাখ টিকা উপহার দেওয়ার কথা বলেছে। তবে চীনা টিকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে। তবে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময়সীমা ১৬ সপ্তাহ করার চিন্তা করছে অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক মো. নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দ্রুত টিকা সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। জনসাধারণকে বলব, আপনারা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *