রমজান আসলেই ইসরাইল নামক ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটি’ মুসলমানদের ওপর তার বর্বরোচিত হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর মুসলিম বিশ্ব নীরব হয়ে দেখতে থাকে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া ফিলস্তিনি, নারী, পুরুষ, শিশু, যুবক বৃদ্ধসহ বহু মানুষ।
আবারও রমজান। আবারও মসজিদে আকসা। আবারও সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্য। ফিলিস্তিনিদের ওপর চলছে ইসরাইলের বর্বর হামলা।
ইসরাইল সেই ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনিদের ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বিরামহীনভাবে চলছে সেই হামলা নির্যাতন।
প্রতিদিনই কোনো না কোনো ফিলিস্তিনিকে ঘর থেকে বের করে তার ঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারো ভিটে মাটি কারো বা ফসলের জমি কেড়ে নিচ্ছে ইসরাইল।
আর যে কজনও নিজেদের ভিটে-মাটিতে বাস করছেন তাদের বসতবাড়ির চারিদিকে বিশাল উঁচু দেয়াল তৈরি করে সেগুলোকে এক রকম বন্দিশালায় পরিণত করে রেখেছে।
এ নিয়ে মালায়শিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ খুব চমৎকার একটা কথা বলেছিলেন। আঙ্কারায় আমি তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম।
মাহাথির মোহাম্মাদ বলেন, “পৃথিবীর সকল সন্ত্রাসের মূলেই হচ্ছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করে, সেখানের ৯০ ভাগ আরব জনগণকে উৎখাত করে ইসরাইলের নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টিই হচ্ছে আধুনিক সন্ত্রাসবাদের শুরু। ইসরাইলকে থামাতে না পারলে সারা দুনিয়াকে সন্ত্রাস মুক্ত করা যাবে না। কারণ ইসরাইল হচ্ছে সারা দুনিয়ার সন্ত্রাসের মূল উৎস।”
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্য যে এই বাস্তবতাটা আরব বিশ্বের নেতারা এখনও বুঝলেন না, বা বুঝতে চাইলেন না। অথবা বুঝেও না বোঝার ভান করে রইলেন। তা না হলে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মিশর, কুয়েত, জর্ডানসহ আরও যেসব আরব দেশ আছে। তারা কেন নিষ্ক্রিয়?
এ নিয়ে ফিলিস্তিনিদেরও অভিযোগের শেষ নেই। যে আরব বিশ্বের প্রতি তাকিয়ে আছে ফিলিস্তিনি মাজলুম জনতা সেই আরবরাই ফিলিস্তিনিদের দিকে মুখ তুলে তাকায় না।
এ নিয়ে ফিলিস্তিনি একাডেমিশিয়ান ড. আলী রেজেগ তার হতাশা এবং ক্ষোভের কথা আমার কাছে এভাবে ব্যাক্ত করেন, “দুর্ভাগ্যজনক হলো, আমরা আরব দেশগুলো থেকে যা প্রত্যাশা করেছিলাম সেভাবে কোনো পদক্ষেপেই নেয়নি তারা। ফিলিস্তিনিদের ওপর এবং আল আকসা মসজিদে হামলার বিরুদ্ধে শুধুমাত্র দু-তিনটি দেশে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
‘আমরা ফিলিস্তিনিরা আরব দেশগুলো থেকে আরো বেশি সহযোগিতা আরো বেশি একশন প্রত্যাশা করছি। বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র জর্দান, সিরিয়া, লেবানন, মিশর এবং আলজেরিয়া থেকে । আমরা মনে করি সব আরব দেশ এবং মুসলিম দেশের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। ফিলিস্তিনিদের এবং আল আকসা মসজিদ রক্ষায় তাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা দরকার।”
কিন্তু কী করছে এই আরব বিশ্ব? ইসরাইলের সাথে রঙ্গলীলায় ব্যাস্ত। অথচ প্রতিদিন জুলুম নির্যাতন হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ওপর। হত্যা, হামলা, মামলা, উচ্ছেদ, ধরপাকড় সব কিছুই চলে সেখানে। অথচ এই বর্বরোচিত আক্রমণের বিরুদ্ধে কেউ কিছু করেছেন না, কেউ কিছু বলেছেন না?
শুধু আরব নেতারা না, প্রায় সব মুসলিম দেশের নেতারা তাদের গদি রক্ষায় ব্যাস্ত। ইসরাইলের বিপক্ষে সত্যিকার অর্থেই কোন পদক্ষেপ নিলে তাদের গদি হারানোর ভয় আছে যে? আর মুসলিম বিশ্বের সর্ব বৃহৎ সংস্থা ওআইসি। এটি তো একটি নাম সর্বস্ব সংগঠন। যে ওআইসির জন্মই হয়েছিল মসজিদে আকসা এবং ফিলিস্তিনের জন্য সেই প্রতিষ্ঠানটি গত ৫২ বছরে ফিলিস্তিনের জন্য কিছুই করলো না!
লোক দেখানো কিছু মিটিং ফিটিং আর দায়সারা গোছের বিবৃতি দিয়েই নিজের কর্তব্য পালন করলো। আর গত এক দশকে তো নেতৃত্বের লড়াইয়ে আরও অকেজো হয় পড়েছে এই সংগঠনটি।ওআইসিতে তুরস্কের নেতৃত্ব মেনে নিতে পারেনি সৌদি আরব। তাই ইচ্ছা করেই, তুরস্কের নেতৃত্বে থাকাকালীন ওআইসিকে মূলত নিষ্ক্রিয় করে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
এখন তুরস্ক নতুন করে এটিকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছে কিন্তু আসলে লোক দেখানো কিছু মিটিং ছাড়া কার্যকরী কোন ফল আসবে না ওআইসির সম্মেলন থেকে।
আর মুসলিম বিশ্বের আটটি দেশ নিয়ে ডি-এইট নামক যে সংগঠনটি তৈরি করেন তুরস্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দিন এরবাকান। সেটিকেও সুকৌশলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে আরব লিগ তো আরেক নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান।
অন্যদিকে পশ্চিমা বিশ্বের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড, দ্বিমুখীনীতি, মুসলিম বিদ্বেষিতা, ইসলামোফবিয়া এগুলো তো নতুন কিছু না। যেমন হামলা হলো ফিলিস্তিনিদের ওপর, তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হলো। অথচ পশ্চিমা সেই তথাকথিত মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা সুন্দর করে দোষ চাপিয়ে দিলেন ওই নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের ওপর। ইউরোপ এবং আমেরিকার রাজনৈতিক নেতারা কি নির্লজ্জভাবে ফিলিস্তিনি সাধারণ জনগণকে দোষারোপ করলেন।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইদেন কয়েকদিন আগে তথাকথিত সেই আর্মেনীয় গণহত্যার স্বীকৃতিদানকালে কী বলেছিলেন। “আমি মানবতার এবং মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছি।সুতরাং সারা বিশ্বে মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নিতেই এই পদক্ষেপ।”
এখন ফিলিস্তিনে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, কোথায় তার সেই মানবাধিকার?
তবুও তারা মানবতার ফেরিওয়ালা। আমাদের কাছে মানবতা আর মানবাধিকার ফেরি করে বেড়াবে আর আমরা আমাদের স্বকীয়তা,আমাদের ভ্রাতৃত্ব, নিজেদের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য সব বিলিয়ে দিয়ে তাদের এই তথাকথিত মানবাধিকারকে লুফে নিতে ঝাঁপিয়ে পরব বার বার।
এবার আসি তুরস্কের বিষয়ে। যে তুরস্ক এতো হাঁকডাক, মজলুমের পাশে দাঁড়ানোর এতো নীতিকথা শোনালো সারা বিশ্বকে এতদিন সেই তুরস্ক কী করছে? যার ড্রোনের দাপটে কাঁপে সারা বিশ্ব।
যার সামরিক বাহিনী ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তর শক্তি। যার নেতাকে দেখা হয় মুসলিম বিশ্বের নেতা হিসেবে, মুসলিম বিশ্বের কর্ণধার হিসেবে, মুসলিম বিশ্বের নতুন সালাহউদ্দিন আইয়ুবী হিসেবে। সেই তুরস্ক কী করছে এই ফিলিস্তিনিদের জন্য? এক কথায় যদি বলি তাহলে বলতে হবে কিছুই না।
নেতারা বিবৃতি বক্তৃতা দিচ্ছে, জনগণ মিছিল মিটিং করছে ঠিকই কিন্তু আসলে কার্যকর কোন পদক্ষেপই নেই তুরস্কের পক্ষ থেকে। তাহলে কোথায় সেই নতুন করে খেলাফত ফিরে আসার আষাঢ়ে গল্প আর নতুন আরেক সালাহউদ্দিন আইয়ুবির ফিরে আসার স্বপ্ন?
অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন তুরস্ক কেন অ্যাকশনে যায় না? যে তুরস্ক, লিবিয়ায়, সিরিয়ায়, ইরাকে, আজারবাইজানে, সোমালিয়াতে এমনকি ইউক্রেনেও লড়াই করছে বিশ্বের অনেক পরাশক্তির বিরুদ্ধে সেই তুরস্ক, সেই এরদোগান কেন ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোন একশনে যাচ্ছে না? আর কতদিন অপেক্ষা করবে। আর কত রক্ত ঝরাতে হবে ফিলিস্তিনিদের?
আমি যতটুকু জানি তা হল, তুরস্ক তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কিছু করার। তুরস্কের সরকার, জনগণ, বিরোধীদল, সেনাবাহিনী, সবাই এক কাতেরে। শুধুমাত্র এই ফিলিস্তিন ইস্যুতেই দেখলাম সব রাজনৈতিক দল তাদের কাদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিয়ে পার্লামেন্টে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। দ্ব্যর্থ কণ্ঠে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে। সারা তুরস্কে মানুষ করোনার লকডাউনকে উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছে,মিছিল করছে। সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। সরকার যেন আরও স্পষ্ট এবং সরাসরি একশনে যায়। কিন্তু সরকার সরাসরি একশনে যাচ্ছে না, যেতে পারছে না।
কারণ, ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুধু মাত্র ছোট্ট একটি দেশ বা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ না। ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ মানে পুরো এক পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
অনেক সময় বলা হয়, আরবরা যদি খালি থুতু ফেলে তাতেই ইসরাইল তলিয়ে যাবে। কথাটিতে যুক্তি আছে। খুবই ছোট একটি দেশ ইসরাইল। কিন্তু এখানে ইসরাইল মানে আমেরিকা, ইসরাইল মানে ব্রিটেন, ইসরাইল মানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন,এমনকি ইসরাইল মানে ভারত। ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ মানে বিশ্বের সব বড় বড় পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্যে এমন গলার কাঁটা করে রাখা হয়েছে যাকে না পারছেন তুলতে না পারছেন গিলতে। তাই এই ইসরাইল সমস্যার একমাত্র সমাধান মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। তুরস্ক কয়েকবার এ বিষয়ে পদক্ষেপও নিয়েছিল। কিন্তু সফল হয়নি। এখনও আবার নতুন করে সব মুসলিম বিশ্বের নেতার সাথে পরামর্শ করছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। কিন্তু খুব একটা ফল আসবে বলে মনে হয় না।
আমার মতে, এই অঞ্চলে বা মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক দিক থেকে ইসরাইলের ওপরে আক্রমণ করতে পারবে,অর্থাৎ যুদ্ধ করতে পারবে এরকম একটি মাত্রই দেশ আছে, সেটা হচ্ছে ইরান।
কারণ, সৌদি আরবের প্রচুর অস্ত্র আছে আরব আমিরাতের, মিশরের, কাতারের প্রচুর অস্ত্র আছে যা নিয়ে একত্রে ঝাঁপিয়ে পড়লে ইসরাইল ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, এই আরব দেশগুলোর সব অস্ত্রই অন্যদের কাছ থেকে কেনা। তাদের অনুমতি ছাড়া এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে না। আর এগুলো এমন সব দেশ থেকে কেনা যারা, সিরিয়াতে, ইয়েমেনে, লিবিয়ায়, এই অস্ত্রগুলো দিয়ে আক্রমণ করার অনুমতি দিবে ঠিকই, কিন্তু ইসরাইলের দিকে গুলি করা তো দূরের কথা ওই দেশটির দিকে তাক করতেও দিবে না।
সুতরাং এই অঞ্চলে ইরানই হচ্ছে একমাত্র রাষ্ট্র যার অস্ত্রের সিংহভাগ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি। তাই সে যখন যার বিরুদ্ধে ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারে। তবে ইরান এগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
আর ইরানের পরে আসবে তুরস্কের কথা। একটু আগেই লিখেছি, তুরস্কের নেতৃত্বের ইচ্ছা আছে, জনগণের সাপোর্ট আছে, সেনাবাহিনীর সমর্থন আছে। কিন্তু তুরস্কের সামরিক সামর্থ্য এককভাবে ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যথেষ্ট না। কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি দেশের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সামরিক অভিযান চালানোর জন্য যে পরিমাণ ভারি অস্ত্র-শস্ত্র দরকার সে তুলনায় তুরস্কের নিজস্ব তৈরি অস্ত্রের পরিমাণ খুবই কম। যেমন তুরস্ক থেকে সরাসরি ইসরাইলে আক্রমণ করতে হলে শুধুমাত্র বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনী ব্যবহার করতে হবে। অথচ তুরস্কের এই দুটি বাহিনীকেই বছরের পর বছর দুর্বল করে রাখা হয়েছে। তুরস্কের যুদ্ধ বিমানগুলোর প্রায় সবই আমেরিকা থেকে কেনা। তুরস্কের কোন বিমানবাহী রণতরী নেই যা দিয়ে ভূমধ্যসাগরে ফিলিস্তিনের তীরে তার সামরিক উপস্থিতির জানান দিবে। তুরস্ক থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার পথ পারি দিয়ে ইসরাইলে বিমান হামলা চালানো খুব সহজ একটি কাজ না।
তবে এখানে যে জিনিসটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হচ্ছে যে ইসরাইলের প্রতিবেশী যে দেশগুলো আছে যেমন জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া, মিসর। এই দেশগুলো যদি আক্রমণ করে এবং তখন তুরস্ক, পাকিস্তান, ইরান এবং অন্য মুসলিম দেশ একত্রে এই দেশগুলোকে সামরিক সমর্থন দেয়, একমাত্র তখনই সম্ভব ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। কারণ ইসরাইলের পশ্চিমা শক্তি ছাড়াও আছে পারমানবিক শক্তি। আর মুসলিম বিশ্বের মধ্যে একমাত্র পাকিস্তানের আছে এই শক্তি। সুতরাং এই সব মুসলিম দেশের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদিও তা সম্ভব বলে মনে হয় না।
কিন্তু যদি সেরকম কিছু হয় তখন সে যুদ্ধ হবে এক নতুন এক বিশ্বযুদ্ধ।
কিন্তু দেখুন ইসরাইলের চারপাশের এই মুসলিম দেশগুলো— সিরিয়া, মিসর, লেবানন — এদের সবগুলোকেই কিন্তু অকেজো করে রাখা হয়েছে।
সুতরাং তুরস্কের বা অন্য কোন মুসলিম দেশের এককভাবে ইসরাইলে আক্রমণ করার ক্ষমতা নেই।
ইসরাইলের জুলুম নির্যাতন থেকে ফিলিস্তিনি নিরীহ মানুষকে বাঁচানোর এক মাত্র উপায় সারা মুসলিম বিশ্বের এক কাতারে সামিল হওয়া, যেমনটি বলেছিলেন ওই ফিলিস্তিনি ড. আলী রেযেগ। তিনি ফিলিস্তিনিদের প্রতি বাংলাদেশী মানুষের, সরকারের এবং রাষ্ট্রের সাপোর্টকে অনেক গুরুত্ব সহকারে স্মরণ করেন। বাংলাদেশী মানুষকে তিনি আরও বজ্র কণ্ঠে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনি এই একাডেমিশিয়ান বলেন, “বাংলাদেশী ভাই বোনদের প্রতি আমার আহ্বান হলো, অনুগ্রহ করে আপনারা রাস্তায় নেমে আসুন। দলে দলে জমায়েত হয়ে বেশি বেশি মিছিল মিটিং করুন। ৱ্যালি করুন। ফিলিস্তিনি মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিন যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম তারা চালিয়ে যাচ্ছ তাতে বাংলাদেশী মুসলমানরাও তাদের পাশে আছে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ সব মুসলিম দেশের মুসলমান ভাইদের একত্রে, উচ্চস্বরে ইসরাইলকে জানিয়ে দেয়া দরকার যে শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিরাই মসজিদে আকসার জন্য সংগ্রাম করছে না। তাদের পাশে আছে বাংলাদেশী ভাইয়েরা। ভারতীয় এবং পাকিস্তানী ভাইয়েরাও তাদের পাশে আছে।
কারণ মুসলমানদের প্রথম কিবলা মসজিদে আকসা রক্ষার এই সংগ্রাম শুধু ফিলিস্তিনিদের একার সংগ্রাম না, এই সংগ্রাম সারা মুসলিম উম্মাহর সংগ্রাম। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, আমরা এক জাতি, আমাদের একই আওয়াজ, একই বার্তা এবং একই লক্ষ্য আর তা হলো সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একদিন আল আকসাকে মুক্ত করা।”