ঈদ উপলক্ষ্যে এর মধ্যে রাজধানীর অভিজাত মার্কেটের পাশাপাশি জমে উঠেছে ফুটপাত বাজারও। নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষ ঈদ কেনাকাটা সারছেন এখান থেকে। করোনার মধ্যেও আসছেন প্রিয়জনের জন্য কেনাকাটা করতে। এবারের ঈদে ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের বেচা-বিক্রি তুলনামূলক ভালো, বলছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানী জুড়ে প্রায় অর্ধশত রাস্তার ফুটপাতে চলছে ঈদের কেনাবেচা। এর মধ্যে দৈনিক বাংলা মোড়, মতিঝিল জনতা ব্যাংকের সামনে, মতিঝিল শাপলা চত্বরের চারদিকের ফুটপাত, বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর-পশ্চিম গেটের সামনে, ফকিরাপুল এলাকা, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ হকার্স সমিতি মার্কেট, গুলিস্তান মোড়ের চারপাশের ফুটপাত, নয়াপল্টনের ভিআইপি সড়কের ফুটপাত, গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত, বঙ্গবাজার, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদ নিচকের ফুটপাতেও জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। রাজধানীর উত্তরায় অভিজাত মার্কেটের সামনে ফুটপাতে শার্ট-প্যান্ট ও বাচ্চাদের পোশাক কিনতে দেখা গেছে অনেককেই।
মালিবাগের ফুটপাতে শার্ট ও প্যান্টের পসরা সাজিয়ে বসেছেন কনক দাস নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, বিক্রি ভালোই হচ্ছে। পুলিশি কড়াকড়ি নেই তেমন। সকাল থেকেই ক্রেতা আসতে শুরু করেছেন। মাঝে জুমার নামাজের সময় বিক্রি সাময়িক বন্ধ ছিল। তবে নামাজের পর আবার ক্রেতা সমাগম বেড়েছে।
এদিকে, নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, তাদের বিক্রিও ততই বাড়ছে। আশেপাশের এলাকায়, এমনকি ফুট ওভারব্রিজের ওপরে শতশত হকার তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। তবে নিউমার্কেটের ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের দাবি, করোনার মধ্যে তাদের বিক্রি অনেকাংশে কমে গেছে। ভিড় থাকলেও মানুষের হাতে টাকা না থাকায় বেচাকেনা কম হচ্ছে। শফিকুল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, মানুষ খালি দেখে চলে যায়। বেচা-কেনা তো হয় না। অন্য সময় ঈদের আগে কথা বলার সময় পাওয়া যেত না। এক কথায়, এক দামে বিক্রি করতাম।
রাজধানীর বড় বড় শপিংমল ও বিপণিবিতান সংলগ্ন ফুটপাতেও বসেছেন ব্যবসায়ীরা। এলিফ্যান্ট রোডের আলপনা প্লাজার পাশে ফুটপাত থেকে দুই জোড়া জুতা কিনেছেন ইয়াকুব আলী। তিনি বলেন, সস্তা মনে হলো, তাই বাচ্চাদের জন্য দুই জোড়া জুতা কিনলাম। এবার ঈদে তেমন কিছু কেনার পরিকল্পনা ছিল না। কমে পেলাম বলে কেনা হলো। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকায় ঈদে গ্রামে ফিরছে না মানুষ। এজন্য তারা কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন। মানুষ গ্রামে ফিরলে ফুটপাতে বিক্রি আরো ভালো হতো।
ঈদ কেনাকাটায় বিত্তবানদের প্রয়োজন না হলেও, নিম্ন এবং নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য একরকম আশীর্বাদ রাজধানীর ফুটপাতের বাজার। তবে বিত্তবানদেরও ফুটপাত থেকে গ্রামের মানুষ এবং আত্মীয়স্বজনের জন্য কাপড়চোপড় কিনতে দেখা যায়। সব মিলিয়ে সাধ্যের মধ্যে সেরা জিনিসটা খোঁজার জায়গা এ ফুটপাতের দোকানগুলো।