চলমান অস্থির ও নাজুক পরিস্থিতি বিবেচনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা পরবর্তী উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শক্রমে ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার রাতে হেফাজতের মহাসচিব এই কমিটি ঘোষণা করেন।

কমিটির সদস্যরা হলেন, প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম, সদস্য মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী ও দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান।

এই আহ্বায়ক কমিটি অতি দ্রুত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন।

এর আগে রবিবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় কমিটি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী।

এরআগে   চলমান অস্থির ও নাজুক পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির পর উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শক্রমে ৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিলো বলে জানিয়েছিলেন জুনায়েদ বাবুনগরীর ব্যক্তিগত সহকারী ইনআমুল হাসান ফারুকী।

 

আহ্বায়ক কমিটিতে রয়েছেন- প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম। ৩ সদস্যের এই আহ্বায়ক কমিটি শিগগিরই হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করবে বলে জানান ইনআমুল হাসান ফারুকী।

 

এর আগে রবিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে এক ভিডিও বার্তায় কমিটি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন বাবুনগরী। ভিডিও বার্তায় জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার পরামর্শে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতের কার্যক্রম শুরু হবে।

এদিকে জানা গেছে, রবিবার রাত নয়টার পর থেকে হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার আশেপাশে ও প্রবেশপথে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন।হেফাজত নেতৃবৃন্দ ধারনা করেন যে, বাবুনগরীকে গ্রেফতারের জন্য সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছিলেন।

বাংলাদেশের একটি বড় কওমি মাদরাসা এবং হেফাজতে ইসলামের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা। এই মাদরাসা থেকে ২০১০ সালে হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু দলটির সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক দলের দিকে মোড় নেয়। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ হেফাজতের কমিটিতে যুক্ত হতে থাকেন।

হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর গত বছরের ১৫ নভেম্বর জুনাইদ বাবুনগরীকে আমির ও নূর হোসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করে ১৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় হেফাজতে ইসলামের সম্মেলনে ওই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ একটি ধর্মভিত্তিক অরাজনৈতিক দল হলেও দেশের ভেতরে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতো কর্মসূচি দিয়ে মাঠে আন্দোলন করেছে। সর্বশেষ স্বাধীনতা সুবর্ণজন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশে আন্দোলন করে দলটি। এরপর ধাপে ধাপে দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে ‍পুলিশ।

স্বাধীনতা সুবর্ণজন্তীতে সারা দেশে সহিংসতার ঘটনার পর হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মোহাম্মদ জুনায়েদ আল হাবীব, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আহমেদ আব্দুল কাদের এবং সহকারী মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা জুবায়ের আহমেদসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কয়েকজনকে ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সূত্র- ইত্তেফাক ও ইনসাফ২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *