চুক্তি অনুসারে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন পেতে ভারতের সঙ্গে শক্তভাবে কথা বলা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেছেন, সরকার অগ্রিম টাকা দিয়ে যে টিকা কিনে নিয়েছে এটা আটকানোর কোনো সুযোগ নেই। অন্য দেশের সঙ্গে কী হলো তা আমার জানার দরকার নেই। আমরা আমাদের টাকা দিয়েছি। টাকা নিয়ে দেবে না, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। তাই টিকা পাঠানোর বিষয়ে ভারতের সঙ্গে শক্ত ভাষায় কথা বলা দরকার। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। নাজমুল হাসান পাপন বলেন, বলা হচ্ছে সেরাম ইনস্টিটিউট আমাদের ৫০ লাখ ভ্যাকসিন পুরো রেডি করে রেখে দিয়েছে। কোনো সমস্যা নেই। ওরা ওদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছে। গত মাসে ৫০ লাখ পাঠানোর কথা ছিল। ওরা দিয়েছে ২০ লাখ। এ মাসে এখনো দেয়নি। এতে আমাদের সেকেন্ড ডোজের শর্টেজ হয়ে যাবে সামনে। এজন্য আমাদের এটা ইমিডিয়েট পেতে হবে। যেহেতু সেরাম ইনস্টিটিউট, ওদের সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছে তাদের সরকার আটকে রেখেছে, ছাড়পত্র পাচ্ছে না। কাজেই আমি মনে করি আমাদের সরকারের চুপ করে থাকার কোনো কারণ নেই। সরকারকে ইমিডিয়েটলি বলা উচিত, এই ভ্যাকসিন আমি অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনেছি। আমাদের দিতেই হবে। এটা জোরালোভাবে বলতে হবে। আনঅফিশিয়ালি, ফোনে একটু কথা বলা- এভাবে না। আমার মতে, শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বে এখন চারটি অনুমোদিত ভ্যাকসিন আছে। ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আর কোনোটা অনুমোদনের আগে আনা সম্ভব না। আমরা বেক্সিমকো সরকারকে ভ্যাকসিন এনে দিতে সহায়তা করেছি। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি দেখছি তাতে ভ্যাকসিন বানানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না যাদের ফ্যাসিলিটিজ আছে তারা কেন এ ব্যাপারটা নিয়ে এগিয়ে আসছে না। একটা জিনিস বলতে পারি, এ বছর আমরা বেক্সিমকো আশা করছি স্বপ্ন দেখছি, লোকাল প্রোডাকশন ছাড়া কোনো পথ নেই এবং এমন কোনো ওষুধ নেই যেটা বাংলাদেশ বানাতে পারে না। এখন পর্যন্ত বেক্সিমকোর পরিকল্পনা নেই। কারণ অন্যান্য ফ্যাসিলিটিজ তো আছেই। তাদের বানানো উচিত। এখন আরেকটু সময় দিতে হবে। আর দুই মাসের মধ্যে দেখবেন প্রচুর ভ্যাকসিন চলে আসবে। বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, ‘আমি ক্লিয়ার করছি, এই সংকট জুন পর্যন্ত থাকবে। জুনের পর কোনো সংকট থাকবে না। আমাদের দেড় কোটি ডোজের টাকা দিয়ে দিয়েছি। যেটা আমাদের মে মাসের মধ্যে পাওয়ার কথা। আমরা ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছি। আমাদের ৮০ লাখ বাকি। এ ৮০ লাখ পাওয়ার পর যদি মনে করি ওদের থেকে আর নেব না, তখন অন্য অপশনে যাব। যেটা সরকার পে করেছে, জনগণের টাকা। এটা আটকানোর অধিকার নেই। যত ক্রাইসিস থাকুক না কেন। ভারত সরকারও তাদের অগ্রিম টাকা দেয়নি। আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে ওদের বুক করেছি। গত বছরের অক্টোবরে ব্যাচের জন্য বুক করেছি। পাপন বলেন, বেক্সিমকোর এখানে কিছু করার নেই। সব কাজ ভাগ করা। সরকারের দায়িত্ব আগে টাকা দিয়ে টিকা বুক করা। সরকার সেটা করেছে। বেক্সিমকোর দায়িত্ব ছিল সেটা দেশে এনে দেশব্যাপী পরিবেশন করা। সেটা করেছে। এখানে সব দায়িত্ব আমাদের। সেরামের কোনো বিষয় নিয়ে আমাদের ইস্যু নেই। ওরা যদি না দেয় সরকার আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। এটাও জরুরি না আবার। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা বলে আসছি, বিশ্বাস করি যে ভারত বাংলাদেশের বন্ধু। সময় এসেছে সেটা ওদের দেখাতে হবে। এত মিষ্টি মিষ্টি কথা শোনার দরকার নেই। দয়া চাচ্ছি না। আমার ন্যায্য পাওনা ভ্যাকসিনগুলোই চাচ্ছি- বলেন নাজমুল হাসান পাপন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *