টানা এক সপ্তাহের প্রাণান্ত চেষ্টায় সুয়েজ খাল আটকানো দৈত্যাকার জাহাজ এভার গিভেন নড়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও পুরোপুরি মুক্ত নয় সেটি। পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিলে জাহাজটিকে মিসর ছেড়ে বেরোতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে সুয়েজ কর্তৃপক্ষ। আর সেই ক্ষতিপূরণের অংক হতে পারে ১০০ কোটি ডলার পর্যন্ত।
সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ওসামা রাবি গত সপ্তাহে স্থানীয় একটি টেলিভিশনকে বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া এবং ক্ষতিপূরণ না দেয়া পর্যন্ত জাহাজটি এখানেই থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা দ্রুত সমঝোতার আশা করছি। যে মুহূর্তে তারা রাজি হবে, জাহাজটি তখনই যাওয়ার অনুমতি পাবে।
রাবি জানিয়েছেন, মিসরীয় কর্তৃপক্ষ জাহাজটির মালিকপক্ষের কাছে ১০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে।
জাহাজটিকে নড়াতে কাজ করা ৮০০ শ্রমিকের পারিশ্রমিক, ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির খরচ এবং ড্রেজিংয়ের কারণে খালের যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই অর্থ দাবি করা হবে। তাছাড়া, এভার গিভেন মাঝপথে আটকে থাকায় সুয়েজের দু’পাশে যে ৪০০ জাহাজ আটকা পড়েছিল, তাদের অর্থও ফিরিয়ে দেয়া হবে।
অবশ্য এই ১০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের হিসাব ঠিক কীভাবে বের করা হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করেননি এ কর্মকর্তা।
লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রেফিনিটিভের হিসাবে, সুয়েজ অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় দৈনিক ৯৫ মিলিয়ন ডলার ট্রানজিট ফি হারিয়েছে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ।
তাছাড়া, মিসর কাদের কাছ থেকে এই ক্ষতিপূরণ আদায় করবে সেটাও পরিষ্কার নয। কারণ বিশালাকার কার্গো জাহাজটি জাপানের মালিকানাধীন, পানামার পতাকাবাহী এবং তাইওয়ানের ‘এভারগ্রিন’ কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত। আবার এর সব নাবিক ও ক্যাপ্টেন ছিলেন ভারতের নাগরিক।
এভার গিভেনের জাপানি মালিক শোয়েই কাইজেন কাইশা লিমিটেড জানিয়েছে, তারা এখনও মিসরীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত কোনও বার্তা পায়নি।
আর জাহাজটির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ এভারগ্রিন মেরিন করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট এরিক হিসি বলেছেন, তারা কার্গো বিলম্বের দায় থেকে মুক্ত। কারণ সেটি ইনস্যুরেন্সের মাধ্যমে পূরণ হয়।
সূত্র: দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, ইনসাইডার