রক্তনালীতে রক্তজমাট বাধা, প্রচন্ড মাথা ব্যাথা, বমি বমি অবস্থা, জ্বরাক্রান্ত হওয়াসহ সারা শরীরজুড়ে অস্বস্তি বোধের কারণে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও ইতালিসহ আরও বেশ ক’টি দেশের মত অবশেষে জার্মানিও অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করেছে অক্সফোর্ড ও বৃটিশ সুইডিশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পাহন দেশটির স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পাউল এয়ার্লিশের সঙ্গে কথা বলেঅ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাস্থগিতের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। এদিকে, টিকাটির মান ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ইইউ মেডিসিন এজেন্সিও। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) জানা যাবে ইইউর ২৭ দেশগুলোতে টিকাটি গ্রহণে কোন বাধা থাকবে কিনা। অথবা আরো গবেষণার প্রয়োজনীতা আছে কিনা। যাচাই করা হবে অনুমোদনের বিষয়টিও।
গত ২৯ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়ন মেডিসিন এজেন্সি ইএমএ’র অনুমোদন পাওয়ার পর থেকেই ইউরোপের ২৭টি দেশসহ স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোতে অক্সফোর্ডের এই টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে উঠে আসে।
এর আগে, অতিমাত্রায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে প্রতিবেশী দেশ ডেনমার্ক ও নরওয়ে টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে রক্তনালীতে জমাট বাধাসহ এক নারীর মৃতুতে ১৪ দিনের জন্য এই টিকা গ্রহণ নিষিদ্ধ করে। টিকা প্রদানের আগে পর্যাপ্ত পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন ও প্রয়োগ রাজনীতিবিদদের অপরিপক্ক চিন্তাভাবনার ফসল বলছে ওই দেশ দু’টির সাধারণ নাগরিকেরা।
এই প্রসংগে এক জার্মান নাগরিক বলেন, আমার মতে টিকাটির অনুমোদনসহ পুরো স্ট্র্যাটেজি ছিল অপরিপক্ক একটি সিদ্ধান্ত। এখন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে মনে হচ্ছে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়েছি। শুধু আমি না, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সরবরাহ মান, গ্রহণ ও কার্যকারিতা নিয়েও অন্যান নাগরিকেরাও অসুখী। টিকাটির সবচেয়ে মাইনাস পয়েন্ট ৬৫ বছরের উপরে মাত্র ৩ থেকে ৫ শতাংশ কার্যকরী।
তবে ব্রিটেনের ঔষধ এবং স্বাস্থ্যদ্রব্য উৎপাদন রেগুলেটরি এজেন্সি অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। সংস্থাটির প্রধান বলছে, এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী।
সংস্থাটির মুখপাত্র ফিল ব্রায়ান বলেন, টিকা নেয়ার স্থলে হালকা ব্যাথা হতেই পারে এবং মানবদেহে যে কোন অংশে রক্ত জমাট বাধাও একটা সাধারণ বিষয়। এর সাথে অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার কোনো সম্পর্ক নেই। এই অবস্থায় জার্মান প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তেও শঙ্কিত জার্মানিতে বসবাসরত প্রবাসীরাও।
জার্মান স্বাস্থ্যবিভাগের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ১৬ লাখ ৪৭ হাজারের বেশী মানুষকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে। জার্মানিতে বৃটিশ সুইপমডিশ সংস্থাটি টিকা সরবরাহ করেছে ৩ লাখ ৬২ হাজরের ও বেশী।