দেয়াল টপকে এক গলি থেকে আরেক গলিতে প্রবেশ। গতিবিধি সন্দেহজনক। কিছুক্ষণ এদিক সেদিক। তারপর বাইসাইকেল নিয়ে চম্পট। বাইসাইকেলটি চুরির এই দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লেও এমন অসংখ্য চুরি থেকে যায় আড়ালেই। প্রতিদিন কি পরিমাণ বাইসাইকেল চুরি হয় রাজধানী থেকে তার কোনো হিসাব নেই পুলিশের খাতায়। কারণ, পরিবেশবান্ধব এই বাহনটি চুরি হলে কেউ থানায় গিয়ে খুব একটা অভিযোগ করেন না।

পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার চোরাই বাইসাইকেল কেনাবেচার কেন্দ্রবিন্দু। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি হওয়া বাইসাইকেল প্রথমে আসে এখানে। ১৫-২০ জনের দালাল চক্র ওত পেতে থাকে চোরাই সাইকেল কিনতে। দ্বিতীয় ধাপে চলে চোরাই সাইকেল মেরামত করে নতুন করার কাজ। পরে তা পৌঁছে যায় রাজধানীসহ সারাদেশের সাইকেলের দোকানে। অনুসন্ধানে এমন একাধিক গোডাউনের সন্ধান পেয়ে পুলিশি অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১৫০ চোরাই বাইসাইকেল ও ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে ।

সম্প্রতি রাজধানীতে একটি চোরাই সাইকেলের সূত্র ধরে পুলিশ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে বড় একটি সিন্ডিকেট। লালবাগ বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে একটি বাইসাইকেল চুরি করে বিক্রির জন্য পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারে নিয়ে আসে তিন কিশোর। পথিমধ্যে তাদেরকে আটক করে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। তাদের দেয়া তথ্যে পুলিশ সন্ধান পায় চোরাই বাইসাইকেল ক্রয়-বিক্রয়ের সিন্ডিকেটের।

চক্রটি পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারে চোরাই সাইকেল ক্রয় করে তা বিক্রি করে এমন ১০ থেকে ১৫ জন দালালের তালিকা পেয়েছে পুলিশ। নাজিরাবাজারের আলাউদিন রোডে দালালদের খুঁজতে গিয়ে সন্ধান মেলে বেশ কয়েকটি গোডাউনের।

একদিনে পাঁচটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হয় ৭৮টি চোরাই বাইসাইকেল। দ্বিতীয় দিনের অভিযানে উদ্ধার হয় আরো ৭০টি। সাতটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় প্রায় ১৫০ সাইকেল।

ডিএমপি লাল বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার ইলিয়াস হোসেন বলেন, এ সাইকেলগুলো বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। তাদের কয়েকটা গ্রুপকে আমরা শনাক্ত করেছি।

ডিএমপি লাল বিভাগেরে উপকমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, এই সিন্ডিকেটে তিন ধরনের অপরাধী জড়িত। একদল বাইসাইকেল চুরি করে- যারা অধিকাংশই বয়সে কিশোর। আরেকটি দল চোরাই সাইকেল ক্রয় করে অর্থাৎ দালাল। চোরাই সাইকেল গোডাউনে সংরক্ষণ ও মেরামতের পর ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্রি করে আরেকটি দল। চক্রের আরো সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। সূত্র: সময় টিভি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *