বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গ্রাহক সেবার অনন্য নজির গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে অন্যান্য ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের তুলনায় খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় নগদ।

নগদের ক্রমাগত জনপ্রিয়তায় কিছু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঈর্ষা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের ভেতরে এবং বাইরে অবস্থানরত কিছু ব্যক্তি সবসময়ই সরকারের সমালোচনা করতে ব্যস্ত। এই তথাকথিত সমালোচকদের মধ্যে রয়েছেন অখ্যাত নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল এবং বিতর্কিত সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান। সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান লাভজনক অবস্থায় থাকলে তাদের এত জ্বলার কারণ কি?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে ক্ষেত্রে নগদের গ্রাহক সেবা সবচেয়ে ভালো। নগদের একাউন্ট খুলতে কোন টাকা লাগে না। ক্যাশ আউটে ৯.৯ টাকা লাগে, যা অন্যান্য ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের তুলনায় সর্বনিম্ন। সেভিংসসে লভ্যাংশ দেওয়া হচ্ছে, সেন্ড মানি ফ্রি। একাউন্ট খুলতে কোন ফরম পূরণ করতে হয় না। রবি,এয়ারটেল,জিপির গ্রাহকরা *১৬৭# ডায়াল করে সহজেই নগদ একাউন্ট খুলতে পারেন। নগদে বিভিন্ন ধরনের বিল চার্জ ব্যতীত পে করা যায়।ক্যাশ আউট, সেন্ড মানি সব ক্ষেত্রেই অন্যান্য ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের চেয়ে এগিয়ে থাকায় দ্রুত জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠে নগদ।

২০২০ সালে নগদের মাধ্যমে করোনায় ১৭ লক্ষ পরিবারকে নগদের মাধ্যমে সরকারি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। করোনা মহামারিতে নগদের মাধ্যমে ১০০ টাকায় করোনা টেস্ট করার সুযোগ পেয়েছে জনগণ। ২ লক্ষ গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন ভাতা নগদের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে।

২০২০ সালে ২ হাজার ই-কমার্স ও ৫ হাজার মার্চেন্টকে নগদ প্লাটফর্মে তুলে আনা হয়েছে। ভিসা ও মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে ফ্রিতে নগদ একাউনন্টে টাকা আনার সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

নগদের মাধ্যমে স্কুল কলেজে ভর্তি ফি জমা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সরকার ‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ ভাতা ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিতরণ শুরু করেছে। ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় ছয় জেলার ৬৫৫টি স্কুলের ৮৬ হাজার ৪৫২ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে উপবৃত্তি এবং শিক্ষা উপকরণ ভাতা প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছর সব মিলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) ‘নগদ’-এর মাধ্যমে এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে ভাতা ও উপবৃত্তি দেবে। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় নগদের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বৃত্তি বিতরণে যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঘটনা।

এই জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে অনেকেই নগদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলছেন। বিদেশে বসে ফেসবুকে নগদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন, বিভিন্ন পত্রিকায় নগদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করছেন। এই অপপ্রচারের কারণ কি?

প্রতি বছর অসংখ্য বিদেশী কোম্পানি দেশের রাজস্বের একটা বড় অংশ বাইরে নিয়ে যায়। এখন দেশের কোন কোম্পানি ভালো করছে বলে টাকা দেশেই থাকছে। এটাই কি তাদের জ্বলুনির কারণ?

নগদের সাফল্যে যাদের ক্ষতি হয়েছে তারা ঘুরেফিরে আকারে ইঙ্গিতে বারবার বলছেন নগদ অমুককে সামনে রেখে ব্যবসা করছে।

নগদ কাজ করছে ডাক বিভাগকে সামনে রেখে। মৃত প্রায় ডাক বিভাগকে লাভের মুখ দেখিয়েছে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে। এতে কার ক্ষতি হয়েছে?

এই সমালোচনাকারীরা আবার বলেন, সরকারের কোন প্রতিষ্ঠান লাভজনক নয়। ২০২০ সালে আয় থেকে ডাক বিভাগকে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা লাভ দিয়েছ নগদ। যা ডাক বিভাগের ২০০ বছরের ইতিহাসের রেকর্ড। যখন ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ লাভ করছে তখন সেটাও তাদের সহ্য হচ্ছে না। দেশের কেউ ভালো করার চেষ্টা করলে তাকে টেনে নামাতে উঠেপড়ে লেগে থাকে এরা। আসলে তাদের উদ্দেশ্য কি?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই খাতে ১২ বছর ধরে কাজ করা একটি কোম্পানির পক্ষে ৫০০ কোটি টাকায় অপপ্রচারে নেমেছে কিছু ব্যক্তি, কিছু বুদ্ধিজীবী নামধারী দেশবিরোধী অপশক্তি। বিভিন্ন সময় সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে টাকার বিনিময়ে দেশের স্বার্থবিরোধী এবং বিদেশী শক্তির পক্ষে অপপ্রচার চালানো এই চক্রের হোতা তাসনিম খলিল নগদের বিরুদ্ধেও অপপ্রচার শুরু করেছেন। টাকার বিনিময়ে নগদকে বিতর্কিত করতে অনলাইনে সক্রিয় এই তথাকথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এর আগে দেশবিরোধী নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।

ওই নামধারী বুদ্ধিজীবীরা অবাক হয়েছেন, ১২ বছর ধরে একটা কোম্পানি কাজ করছে, সেখানে নতুন একটা কোম্পানি এসেই তাদের চেয়ে বেশি লাভজনক হয় কিভাবে!

একটা নতুন কোম্পানি এসে যদি গ্রাহক সেবা দিয়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়, গ্রাহকদের মন জয় করে সেটা কি দোষের কিছু?

কোন ক্ষেত্রে যদি প্রতিযোগিতা না থাকে তাহলে সেখানে ভালো কিছু হয় না। একটা ক্ষেত্রে যদি একটা কোম্পানিই থাকে তাহলে গ্রাহকের ভালো মন্দ বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে না। ওই একক কোম্পানির ওপরেই গ্রাহককে নির্ভর করতে হয়। সেই কোম্পানির সেবা যদি ভালো নাও হয়, গ্রাহককে বাধ্য হয়ে সেই কোম্পানির সেবাই নিতে হয়। কিন্তু যদি প্রতিযোগিতা থাকে তাহলে গ্রাহক তার জন্য ভালো সেবাদানকারী কোম্পানিকে খুঁজে নিতে পারে। নগদ বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে সুস্থ প্রতিযোগিতা নিয়ে এসেছে।

এই সুস্থ প্রতিযোগিতাই অনেকের পছন্দ নয়। তারা চান গ্রাহকদের জিম্মি করে বেশি লাভ করতে। তাই নগদের সাফল্যে তারা জ্বলে পুড়ে ছাড়খাড় হচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *