এম শরীফ ভূঞা , ফেনী :
ফেনীর সোনাগাজীতে দেড় বছরেও পরিচয় মিলেনি অজ্ঞাত ব্যক্তির। মুহুরী রেগুলেটরের নীচ থেকে উদ্ধার করা হয় অর্ধগলিত এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ। তার বয়স ছিল আনুমানিক ৫০-৫৫ বছর। অথচ ভিসেরা রিপোর্টে পাওয়া গেছে তাকে হত্যার আলামত। মামলাটি তিনজন তদন্ত কর্মকর্তার হাতবদল হলেও উদঘাটন হয়নি হত্যার রহস্য। হয়তোবা এই হতভাগ্য ব্যক্তিটির পরিবার এখনো তার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। কখন ফিরবেন পরিবারের কাছে। কিন্তু তার স্বজনরাতো জানেনা এই ব্যক্তিটি ফেনী পৌরসভার গণকবরাস্থানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে সমাহিত রয়েছেন। সঠিক কোন নাম পরিচয় ও ঠিকানা না পাওয়ায় আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করতে হিমসিম খাচ্ছেন পুলিশ। ভিসেরা রিপোর্ট প্রাপ্তির পর দায়ের করা হয়েছে হত্যা মামলা।
সোনাগাজী মডেল থানার এস আই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম সরকার জানান, ২০১৯ সালের ১৭আগস্ট বিকেলে সোনাগাজীর মুহুরী রেগুলেটরের নীচে পানিতে ভাসমান অজ্ঞাত ব্যক্তির ভাসমান মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় জনতা। স্থানীয় জনতার সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরত হাল রিপোর্টে জানা যায়, তার গায়ে একটি হাফ হাতার শার্ট, মাথার দু’পাশে সাদা পাকা চুল ছিল, মাথার তুলিতে কোন চুল ছিলনা এবং গলায় সুতা দিয়ে পেঁছানো একটি স্টীলের লকেট পাওয়া যায়।
এঘটনায় স্থানীয় গ্রাম পুলিশ দেলোয়ার হোসেন শাহআলম বাদি হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। সোনাগাজী মডেল থানার মামলা নং-১৮, তাং-১৭-০৮-২০১৯। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন সায়েদুর রহমান। পরদিন ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আবু তাহের, মেডিক্যাল অফিসার ডা. সৈয়দ শাহরিয়ার আহম্মদ ও ডা. এটিএম আবদুল্যাহর সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল টিম ময়না তদন্ত করেন। পরে ফেনী পৌরসভার গণকবরাস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। এসআই সায়েদুর রহমানের বদলীর পর মামলার তদন্তভার পান এসআই ময়নাল হোসেন। তারও বদলীর পর তদন্তভার পান এই আই আনোয়ার হুসেইন। কিন্তু চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রেরিত ভিসেরা প্রতিবেদনে জানা যায় আঘাত জনিত কারণ ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল।
২০২০ সালের ৩সেপ্টেম্বর প্রাপ্ত ডাক্তারি সনদের মাধ্যমে হত্যার ঘটনা নিশ্চিত হয়ে একই দিন এসআই আনোয়ার হুসেইন বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সোনাগাজী মডেল থানার মামলা নং-২০, তাং-৩০-০৯-২০২০। এরপর মামলাটির তদন্ত ভার পান এসআই মাহবুব আলম সরকার।
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, গত কয়েক মাসেও অজ্ঞাত ব্যক্তিটির নাম, ঠিকানা ও পরিচয় না পাওয়ায় আদালতে অভিযোগ পত্র দিতে হিমসিম খাচ্ছেন তিনি। তাই এই ব্যক্তির পরিচয় পেতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। তিনি ধারণা করছেন অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নদীর পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *