সম্প্রতি জেলা প্রশাসকরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন।

ঘোড়াঘাটের ইউএনও সরকারি বাসভবনে আক্রান্ত হওয়ার পর সারাদেশে ইউএনওদের বাসভবনে চারজন আনসার সদস্য ও একজন প্লাটুন কমান্ড্যান্ট নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে ইউএনওদের সতর্ক হয়ে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে।

চিঠিতে ডিসিরা বলেছেন, ডিসি কার্যালয়ের রেকর্ডরুমে সরকার ও জনগণের অতি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। নথিসহ জেলার ট্রেজারি শাখায় বিভিন্ন মামলার আলামত সংরক্ষণ করা হয়। এখানে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভা, জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভা, জেলা রাজস্ব সভাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলার দপ্তর প্রধানরা, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকেন। পাশাপাশি জেলা প্রশাসককে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অভাব-অনুযোগ-অনুরোধ শুনতে হয় ও গণশুনানি করতে হয়।
ডিসি কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নির্বহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, জেনারেল সার্টিফিকেট আদালতসহ রাজস্ব আদালতে প্রতিদিন অসংখ্য বিচারপ্রার্থী আসেন।

টিঠিতে আরও বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু ও জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই দপ্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, মাঠ প্রশাসনে ডিসি কার্যালয় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে। এই অর্থে সরকারের প্রতীকী অবস্থান ডিসি কার্যালয়। মাঠপ্রশাসনে এই কার্যালয়ের অসীম গুরুত্ব আছে বলেই কার্যালয়ের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। মাঠ প্রশাসনে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এই বিবেচনা থেকেই নিরাপত্তা নিশ্চিতের আবেদন করা হয়েছে।

খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, এমন চিঠি পেয়েছি। এখন সিদ্ধান্ত চেয়ে মতামতসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হবে। নিরাপত্তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব বুঝে তারাই সিদ্ধান্ত দেবেন।

এ ধরনের কোনো চিঠি পাননি জানিয়ে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান জানান, ট্রেজারি অফিসে বৃটিশ আমল থেকে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। ডিসি কার্যালয়ে প্রয়োজন হলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ডিসিরা তার কার্যালয়ের নিরাপত্তা চাইতেই পারে। কিন্তু সরকারের সক্ষমতাও তো থাকতে হবে। সরকারের সব অফিসে তো নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা সম্ভব নয়। তবে সামাজিক বা রাজনৈতিক কোনো অস্থিরতার আশঙ্কা থাকলে অথবা তেমন কোনো প্রয়োজন হলে পুলিশ মোতায়েন করা যেতে পারে। আগে এমন পরিস্থিতিতে যখনই প্রয়োজন হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এখনতো সেই পরিস্থিতি বা পরিবেশ কোনোটাই নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *