রাজধানীর ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২-এ দোকানের বৈধতা দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে করা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

৩৪ কোটির বেশি টাকা আত্মসাতের এই মামলা নিয়ে বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমাম এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি বাদীর আইনজীবী মো. নাহিদ ইসলাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার মামলাটি হওয়ার পর একই বিচারক শুনানি নিয়ে বুধবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

মামলায় সাঈদ খোকন ছাড়া যে ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার, সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাজেদ, কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান ও ওয়ালিদ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন, মো. ইউসুফ আলী সরদার, মাজেদ পরস্পর যোগসাজসে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর ব্লক-এ, বি, সি মূল বিল্ডিয়ের মূল নকশা বহির্ভূত অংশ হিসাবে সেখানে স্থাপনা তৈরি করে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা প্রদান করেন। ওই ঘোষণার পর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে যোগাযোগ করলে মেয়র সাঈদ, কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ টাকা জমা দিলে দোকান বরাদ্দ দিবে বলে জানায়। আর যাদের নামে সিটি সুপার মার্কেট-২ এর মূল মার্কেটে দোকান বরাদ্দ আছে তাদের ভুল বুঝিয়ে ভয়ভীতি দেখাইয়া ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর মূল নকশা বকির্ভূত এক্সটেনশন ব্লক-এ, বি, সি তে দোকান না নিলে মূল মার্কেটের দোকান মালিকদের দোকানের বরাদ্দ বাতিল করবে এবং তালা লাগাইয়া দেওয়ার হুমকি প্রদান করে সেখানে দোকান বরাদ্দ নিতে বাধ্য করেন।

মামলায় আরও বলা হয়, তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকন, ইউসুফ আলী সরদার ও মাজেদসহ অন্যান্য আসামিরা অর্থ আত্মসাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে পে-অর্ডার এবং নগদে গ্রহণ করে নকশা বর্হিভূত দোকান বরাদ্দ করেন। বাদী মার্কেট সমিতির সভাপতি থেকে অবৈধ বরাদ্দে বাধা দিলেও আসামিরা বাদীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিদের পালিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে তাকে প্রাণনাশের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট আসামি ইউসুফ আলী সরদার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ বাদীকে রাজধানীর বনানীতে ডেকে নিয়ে অবৈধ দোকান বরাদ্দের বিষয়ে চুপ থাকতে বলেন, তা না হলে খুব খারাপ হবে বলে জানায়। তাই বাদী পরিবার পরিজনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে চুপ থকেন। যেহেতু আসামিগণ অবৈধ দোকান বরাদ্দ বাবদ ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের কাছে থেকে বিনা রশিদে বা কোনো প্রকার ডকুমেন্ট না দিয়েই কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন। তাই পরবর্তীতে বাদী ডকুমেন্ট রাখার জন্য বাদীর রিদি কন্সটাকশন সাপ্লিয়ারসের উত্তরা ব্যাংকের ফুলবাড়িয়া শাখার হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় চৌত্রিশ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হহাজজার ৫৭৫ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে বাদীর ওই হিসাবের মধ্যেমে মেয়ের সাঈদ খোকনের কথা মতো শাহনেওয়াজ এন্টারপ্রাইজের স্টান্ডাড ব্যাংক হিসাবে ৭৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে মেয়ের সাঈদ খোকনের কথামতো এক্সিম ব্যাংক পল্টন শাখায় ১২ কোটি ৫৫ লাখ, সাউথইস্ট ব্যাংক কর্পোরেট শাখায় ৪ কোটি ৩৯ লাভ ৭০ হাজার টাকা, যমুনা ব্যাংক দিলকুশা শাখায় ১ কোটি উত্তরা ব্যাংক ফুলবাড়িয়া শাখায় ১৬ কোটি টাকাসহ ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৫৭৫ টাকা গ্রহণ করে পরস্পর যোগসাজসে আত্মসাৎ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *