প্রবাসী আব্দুর রহিম দেশে ফিরে উপজেলা কৃষি অফিস কাপাসিয়া থেকে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার উপর র্দীর্ঘ এক বছরের পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ নেন। পরবর্তীতে পরীক্ষামূলক তিন বিঘা জমিতে দেশীয় জাতের আদা চাষ করেন এবং বেশ সফলও হয়েছেন তিনি। আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমি পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ নিয়েই আদা চাষ শুরু করি। রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম হলে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার মতো আয় হবে।’

কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুর রহিম আদা চাষের পাশাপাশি মাছের খামার, হাঁসের খামার ও পোল্ট্রি খামার গড়ে তুলেছেন।

তিনি বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে দেশীয় জাতের আদা চাষ করেছি। আমি এখানে প্রায় ১০ মন আদা রোপণ করেছি। যা রোপণ করতে আমার প্রায় ১ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। তার সঙ্গে চাষাবাদ, কীটনাশক এবং শ্রমিক খরচ বাবদ এই পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এদিকে কৃষক আব্দুর রহিম আশা করছেন, যদি আদায় রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম হয় তাহলে সকল উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে তার প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার মতো আয় হবে।’

২০২০ সালে স্থানীয় কৃষি অফিসের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব খাত থেকে দেশীয় আদা চাষের প্রদর্শনী গ্রহণ করেন তিনি। আর এই আদা চাষ, মাছ চাষ, পোল্ট্রি খামার ও হাঁসের খামারের মাধ্যমেই তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা ও স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। আদা চাষে সফল হলে তিনি বাণিজ্যিকভাবে এর চাষাবাদ শুরু করবেন বলেও জানান।

এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বশাক জানান, সরকারের একটা প্রকল্প (এসএমই)-এর আওতায় যে সকল কৃষকরা কাজ করে আমরা শুধু তাদের বীজ উৎপাদক হিসেবে তৈরি করবো। তারা যাতে বাণিজ্যিকভাবে তাদের উৎপাদিত বীজ বিক্রি ও সরবরাহ করতে পারে সে জন্য আমরা তাদেরকে লাইসেন্স করে দিব। যাতে করে তারা ব্যবসায়ী ও বীজ উৎপাদক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

তিনি আরও বলেন, ‘যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল কিন্তু ব্যক্তি উদ্যোগে উদ্যোক্তা হতে চায় তাদেরকে আমরা সকল ধরনের সহযোগিতা করবো। অন্যদিকে প্রবাসীদের মধ্য থেকে কেউ যদি উদ্যোক্তা হতে চায় তাহলে তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতা ছাড়া সকল ধরণের সুবিধা দেওয়া হবে। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই হচ্ছে কৃষিটাকে বাণিজ্যিকীকরণ করা। তারই লক্ষ্য হিসেবে সকল মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার একটা অংশ মাত্র।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওসমান মো. সোহেল জানান, যেসব বেকার ভাই ও বোনেরা কৃষি কাজে মাধ্যমে উদ্যোক্তা ও স্বাবলম্বী হতে চায় আমরা তাদেরকে সকল ধরণের কারিগরি সহায়তা, অনলাইনের মাধ্যমে সকল ধরণের পরামর্শ ও বীজ, বালাইনাশকসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকবো। যাতে করে প্রবাসী আব্দুর রহিমের মতো সবাই কৃষিতে আত্মনিয়োগ করে অর্থনৈতিক ভাবে নিজেকে ও পরিবারকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারে।

এছাড়াও বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারির এই সময়ে আমরা যেকোনো বেকার ভাই ও বোনেরা কৃষি কাজে মাধ্যমে উদ্যোক্তা ও স্বাবলম্বী হতে চাইলে সরকার গৃহীত প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *