চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশিরের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয় আদালত।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে মারধর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও বিশোদগার করায় পৃথক দুই মামলায় স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে আসলে শিশিরের জামিন না মঞ্জুর করে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে পৃথক দুই মামলার জামিন শুনানি শেষে এই নির্দেশ দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সফিউল আজম ও কামাল হোসেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই কচুয়া উপজেলা সদরে ‘কচুয়া শহীদ স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ এর নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ন দাস শুভ এর উপস্থিতিতে বরখাস্ত হওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশিরের মারধরের শিকার হন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরে আলম। ওই ঘটনায় প্রকৌশলী রাতেই কচুয়া থানায় চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির, সহযোগী ইমাম হোসেন ও জহির হোসেনসহ ১৫/২০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালতে চেয়ারম্যান ও অপর দুই আসামির জামিন না মঞ্জুর করে বিচারক মো. কামাল হোসেন কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অপরদিকে চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির ২৩ এপ্রিল ও ২৬ মে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন নিয়ে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও বিশোদগার করায় গত ২২ জুলাই তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরপত্তা আইন ২১/২৯/৩১ ধারায় চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন চাঁদপুর পৌরসভার বাসিন্দা মো. কবির হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম স্বাধীন। এই মামলায়ও চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির আদালতে স্বেচ্ছায় উপস্থিত হয়ে জামিন চাইলে বিচারক সফিউল আজম জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. হেলাল উদ্দিন এবং বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. আজাদ চৌধুরী।
এর আগে প্রকৌশলীকে মারধরের ঘটনায় চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশিরকে ২৩ জুলাই স্থানীয় সরকার পল্লী, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সময় উপজেলার ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান সুলতানা খানমকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
শাহজাহান শিশিরকে সাময়িক বরখাস্তের পর ২৩ জুলাই পৃথক আরেক বিজ্ঞপ্তিতে স্থানীয় সরকারি বিভাগ ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সরেজমিনে ঘটনাটি তদন্ত করেন। বর্তমানে ওই তদন্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার বিভাগে দাখিলের অপেক্ষায় রয়েছে।