২১ আগস্টের ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জড়ানো ষড়যন্ত্রের অংশ বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে দোয়া ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মির্জা ফখরুল। পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ দাবি করেন তিনি।
তখন সাংবাদিকরা ‘জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ঘটনায় জড়িত’ বলে আওয়ামী লীগের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, এটা তারই একটা অংশ। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সত্যিকার অর্থে যারা মুক্তিযোদ্ধা, বার বার যারা দেশের স্বাধীনতা চেয়েছেন, যারা স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন, যারা নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করেন না, তাদের ওপরই বার বার আঘাত এসেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বার বার বলেছি, এটা একটা ষড়যন্ত্র। ১৫ আগস্টের হত্যার তদন্ত হয়েছে। রায় হয়েছে। দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করেছে। সে ক্ষেত্রে আবার নতুন করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম জড়ানোর চেষ্টাই হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপচেষ্টা এবং এই দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের চিন্তা চেতনার প্রতি অবমাননা। একুশে আগস্টের সঙ্গে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জড়ানোর অপচেষ্টাও তারই একটা অংশ।
বিএনপি একুশে আগস্টের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তারা আলামত নষ্ট করেছে’ এমন অভিযোগের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আলামত বিএনপি নষ্ট করেনি। আজকে যিনি এ কথা বলছেন, তিনি নিজেই আলামত উপস্থাপন করেননি।
‘আপনারা জানেন, গাড়িটা তদন্ত সংস্থাগুলো চেয়েছিল, সেই গাড়ি দেওয়া হয়নি। মামলা শুরু হলো, সেই মামলার সাক্ষী ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেই মামলায় সাক্ষ্য দিতে যাননি। অর্থাৎ তিনি সহযোগিতাই করেননি। এতেই প্রমাণিত হয়েছে, তারা রাজনৈতিক উদ্দেশে এই মামলাটিকে তখনও ব্যবহার করতে চেয়েছেন, এখনও করছেন। প্রকৃতপক্ষে এই মামলাটি থেকে কেউ যদি বেনিফিশিয়ারি হয়ে থাকে, সেটা আওয়ামী লীগ হয়েছে।
ঢাকা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আজকে সভা আছে, তারপরে জানানো হবে।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, তাদের দুর্বলতাই একমাত্র দায়ী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ার পেছনে। মিয়ানমারকে চীন আর ভারত সমর্থন দিচ্ছে। তাদের সঙ্গে কোনো রকমের রফা করার ক্ষমতা তাদের (সরকারের) নেই। দ্বিতীয় হলো প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টাকে বিশ্বে তুলে ধরতে পারেননি। এ কারণে রোহিঙ্গাদের বিশাল একটা বোঝা এই দেশের মানুষকে বহন করতে হচ্ছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমদ খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।