নিউজ ডেস্ক: হাট-বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। বিক্রিও বেশ ভালো, পাটের ন্যায্যমূল্য পেয়ে চাষিদের মুখে আনন্দের হাসি। বলছিলাম পাবনা জেলার পাট চাষিদের কথা। চলতি বছর পাবনা এলাকায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। ভালো দামে পাট বিক্রি করতে পারায় পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রমতে, চলতি পাট মৌসুমে সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট জাগ দিতেও তেমন বিড়ম্বনা পোহাতে হয়নি চাষিদের। ভালো পানিতে পাট পচানোর জন্য অনেক দূরদূরান্ত থেকে পরিবহনে করে পাট নিয়ে এসে খাল-নদীতে জাগ দেওয়া হয়। এতে অবশ্য চাষিদের খরচ একটু বেড়েছে।

সূত্র জানায়, চলতি বছর পাবনায় ৪৪ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো। এর মধ্যে তোষাজাত ৪৩ হাজার ৪০০, দেশি ১৭৪ হেক্টর এবং মেছতা ৬৮০ হেক্টরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর আবাদ হয়েছে ৪৪ হাজার ২৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে তোষা জাত ৪৩ হাজার ৭১০, দেশি ২২৫ হেক্টর ও মেছতা ৩১০ হেক্টরে আবাদ হয়।

জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে সাঁথিয়াতে। দামও গত বছর থেকে এ বছর বেশি পাচ্ছেন কৃষকরা। গত বছর প্রতিমণ পাট বিক্রি হয়েছে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছিলো ৮ থেকে ১১ মণ। সাঁথিয়ার বোয়াইলমারী ও আতাইকুলা হাটে গিয়ে দেখা যায়, এ বছর মান ভেদে প্রতিমণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকা করে।

পাটচাষিরা জানান, এ বছর প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ৭ থেকে সর্বোচ্চ ১০ মণ। প্রতি বিঘা জমি চাষ, বীজ, সার, কীটনাশক, পরিচর্যা, পচানি দিতে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা নেওয়ার পরিবহন খরচ থেকে শুরু করে পাট ছিলা ও রোদে শুকিয়ে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়।

সাঁথিয়ার ভবানীপুর গ্রামের মনতাজ আলী, পৌর সদরের দৌলতপুর গ্রামের ছোহরাব শেখ জানান, প্রায় তিন বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছি। শুরুতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট বড় হতে দেরি হয়। পরে বৃষ্টি হওয়াতে শুধু পাট গাছ বড় হয়েছে। আঁশ তেমন মোটা না হওয়ায় ফলন একটু কম হয়েছে। যেখানে ১২ মণ হওয়ার কথা সেখানে ১০ মণ হয়েছে। তবে দাম ভালো পাওয়ায় লাভ হয়েছে। এরকম বাজার থাকলে আগামীতে আরও পাট চাষ করবো।

এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সঞ্জয় কুমার গোস্বামী জানান, এ বছর পাটের বাম্পার না হলেও ফলন ভালো হয়েছে। তবে গত বছরের থেকে আবাদও যেমন বেশি হয়েছে, তেমনি দামও গতবারের চেয়ে মন প্রতি ৭০০ ৮০০ টাকা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমান বাজার অব্যাহত থাকলে আগামীতে আরও কৃষক পাট চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশা করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *