পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ২১৭.৭৮ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলে ১০ হাজার দক্ষ-অদক্ষ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই অঞ্চলে স্থাপিত সব শ্রেণির (এ/বি/সি) কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য রফতানি হবে। এতে পঞ্চগড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত হবে। কৃষকের পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে।

সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর ও দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এর শুভ সূচনা করা হয়।

দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীগঞ্জ, দেবীডুবা ও সোনাহার ইউনিয়নের প্রধানপুর, দেবীডুবা, ও দাড়ারহাট এলাকাজুড়ে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের পক্ষে সহকারী ব্যবস্থাপক একেএম আনোয়ার দলিলে স্বাক্ষর করেন।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেব যুক্ত হন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, ভূমি সচিব মাক্ছুদুর রহমান পাটোয়ারী, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, দেবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রত্যয় হাসান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের পক্ষে সহকারী ব্যবস্থাপক একেএম আনোয়ার, দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী বক্তব্য দেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল মান্নান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার। কিন্তু তাকে হত্যার পর সেই স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে তারই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দেশ একদিন বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে পৌঁছে যাবে।

তিনি বলেন, কৃষিতে এগিয়ে থাকা দেশকে এখন শিল্প বিপ্লবের দিকে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য সরকার সারাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের চাহিদাও বাড়বে। ফলে স্থানীয় অর্থনীতির চাকা সব সময় সচল থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্মের কেবল চাকরির পেছনে ছুটে চলা উচিত নয়। তারা যে কোনো উদ্যোগ নিতে পারে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সহকারী ব্যবস্থাপক একেএম আনোয়ার বলেন, সরকার দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় কাজ শুরু করেছে। এসব অঞ্চলে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা ৪০ হাজার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। দেবীগঞ্জের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০ হাজার দক্ষ-অদক্ষ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত সব শ্রেণির (এ/বি/সি) কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য রফতানিও হবে। এতে পঞ্চগড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত হবে। কৃষকের পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশব্যাপী শিল্পের বিকাশ ঘটবে।

তিনি বলেন, অনগ্রসর অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল তথা শিল্পনগর গড়ে তুলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ স্থানান্তরের প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে কর্মকৌশল ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য কাজ করছে সরকার ও বেজা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *