নিউজ ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে রফতানিমুখী উৎপাদনশীল শিল্প পোশাক খাত এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের কাজ হারানো ১০ লাখ শ্রমিককে তিন মাসে তিন হাজার করে নয় হাজার টাকা দেবে সরকার। ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল আর্থিক পরিষেবার (এমএফএস) মাধ্যমে শ্রমিকদের এ টাকা দেয়া হবে।

অর্থ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ টাকা দেয়ার জন্য আগামী সেপ্টেম্বর মাসে সরকারের আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং জার্মানির দেয়া অর্থে এ প্যাকেজ বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে টাকা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রস্তুতির অভাবে তা কিছুটা দেরি হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনার কারণে দেশের অনেক শিল্পকারখানা লম্বা সময় বন্ধ রাখতে হয়েছে। তাতে রফতানি কমে গেছে। কোনো কোনো কারখানা মজুরি কমিয়েছে। তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, অনেক কারখানা শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। হঠাৎ কর্মহীন হয়ে পড়া সেসব শ্রমিকের পাশে দাঁড়িয়েছে ইইউ ও জার্মানি।

ইইউ ও জার্মানি দিচ্ছে ১১ কোটি ৩০ লাখ ইউরো। এর মধ্যে ইইউ দিচ্ছে ৯ কোটি ৩০ লাখ, বাকি দুই কোটি ইউরো জার্মানির অনুদান। সোমবারের দর অনুযায়ী প্রতি ইউরো ১০০ টাকা ৪৭ পয়সা হিসাবে মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ১৩৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, করোনার কারণে চাকরি হারিয়েছেন বা লে-অফ হওয়ার কারণে মজুরি পাচ্ছেন না, এমন ১০ লাখ শ্রমিককে আর্থিক সহায়তা দেবে সরকার। ১০ লাখ শ্রমিককে মাসে তিন হাজার টাকা করে তিন মাস দিতে গেলে ৯০০ কোটি টাকার দরকার পড়বে।

এদিকে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধে গত এপ্রিলে সরকার ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিয়ে তিন মাসের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ দেয়। দুই মাসেই টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় পর আরও দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়। তাতেও সংকুলান না হওয়ায় আরও তিন হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়, যা এখন চলমান।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, রফতানিমুখী সব শিল্পের জন্য এই প্যাকেজ করা হলেও সুবিধাটি নিতে পেরেছে পোশাক খাত।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থে মাসে তিন হাজার টাকা করে তিন মাস টাকা পাওয়ার তালিকায় প্রাথমিকভাবে পোশাক এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের কথা ভাবা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *