সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সদস্য ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বস্ত মিত্র ভাবার কখনই কারণ ছিলো না। কিন্তু ক্রিমিয়া ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন দ্বন্দের ফায়দা নিতে দেরি করেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইউক্রেনের উপর পরিপূর্ণ আস্থাও কখনও দেখায়নি তারা। ইউক্রেনকে তারা অর্থ সহায়তা করেছে, চোরা বাজারে অস্ত্র কিনতেও সহায়তা করেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। মাঝেমধ্যে ছোটখাট অস্ত্রও সরবরাহ করেছে। কিন্তু রাশিয়ার মোকাবেলায় ইউক্রেনকে কখনই কৌশলগত অস্ত্র দেয়ার কথা ভাবেনি ওবামা প্রশাসন। কারণ সামরিক ডকট্রিনেএলাইড এনফোর্সমেন্ট আর পারস্পরিক বিশ্বাসকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়।

৫ বছর ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন সম্পর্ক তলানিতে। এসময় রাশিয়া সমর্থিত যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দিয়েছে কয়েক মিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম। মজার বিষয় হলো এগুলো কোনও মারনাস্ত্র নয়। এর মধ্যে রয়েছে নাইট ভিশন গগলস, ফ্ল্যাক জ্যাকেট, গাড়ি, কাউন্টার ব্যাটারি রেডারসহ ছোটখাট জিনিষ। অভিযোগ রয়েছে, অন্যান্য দেশকে এগুলো যে দরে দেয় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের কাছে নিয়েছে তার কয়েকগুন বেশি। কিন্তু গত বছর সব কিছু বদলে যায়। ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, তারা ইউক্রেনকে অ্যান্টি ট্যাঙ্ক জ্যাভলিন মিসাইল দেবে। কোনও সাবেক সোভিয়েত দেশকে এ ধরণের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র বিক্রির ঘটনা নজিরবিহীন। শুধু এ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এবার মার্কিন আইনপ্রণেতারা কিভেয়ের কাছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপনাস্ত্র বিক্রির সম্ভাব্যতা যাচাই করছেন। বলা হচ্ছে ম্যান পোর্টেবল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমস বা ম্যানপ্যাডগুলো হতে পারে বিখ্যাত স্ট্রিঙ্গার মিসাইল সিস্টেম। যা সোভিয়েত বিরোধী লড়াইয়ে আফগান মুজাহিদিনদের সরবরাহ করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র।

কিয়েভ আসলেই স্ট্রিঙ্গার পাচ্ছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে এটি বাস্তব হলে, বলকান অঞ্চল আর উত্তর ইউরোপে শুরু হয়ে যেতে পারে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতা। যা মনে করিয়ে দিতে পারে শীতল যুদ্ধকে। যদি কিয়েভের হাতে স্ট্রিঙ্গার পৌঁছায় তবে রাশিয়া বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তা নিশ্চিত। কারণ ইউক্রেনের হাতে থাকা প্রায় সব কৌশলগত অস্ত্রের প্রযুক্তিই হয় সোভিয়েত বা রাশিয়ান। তবে ইতোমধ্যেই রাশিয়ার সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক ইউক্রেনের অস্ত্র শিল্পে বড় ধস নামিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অ্যান্টোনভের মতো বৃহৎ অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *