বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একাংশ।

অভিযোগ আছে, এই দুর্নীতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত।

তবে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ভিসির কাছে চাঁদা দাবি করেছিলেন বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন ভিসি ফারজানা ইসলাম। সেই অভিযোগকে সামনে রেখে পদচ্যুত হন ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। এরপরেই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে ভিসির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছেন আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, কোরবানি ঈদের আগে ঈদ সালামির নামে লাখ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে ছাত্রলীগের নেতাদের। টাকার ভাগাভাগি নিয়ে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর ও পদচ্যুত কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর একটি ফোন রেকর্ড ফাঁস হয়। তবে এসব অভিযোগ কানে তোলেননি ভিসি ফারজানা ইসলাম।

এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে তর্কের কিছু স্ক্রিনশট।

ফেসবুকে পোস্ট করা কিছু স্ক্রিনশটে দেখা গেছে টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে তর্কে জড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি প্যানেলের গ্রুপের কয়েকজন নারী নেত্রী।

ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগ করা সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের গ্রুপের মেয়েদের মধ্যে ঈদের সালামি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ভাগ করে দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ৪৪তম ব্যাচের চারুকলা বিভাগের রেদওয়ানা রহমান রুম্মানের কাছে। তবে জুনিয়র মেয়ের কাছে টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি ৪২তম ব্যাচের মেয়েরা। এনিয়ে তর্ক বিতর্ক শুরু হয় মেসেঞ্জার গ্রুপে।

ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ৪২তম ব্যাচের শামীমা নামে এক ছাত্রী এবিষয়ে চঞ্চলের কাছে জিজ্ঞেস করার নির্দেশনা দেন।

এসময় ৪৪তম ব্যাচের রুম্মানের কাছে ৪২তম’র টাকা কেন দেয়া হল এ নিয়ে ক্ষোভ জানান শামীমা, আয়াত, নুসরাত নামে আরও কয়েকজন ছাত্রী। তবে সবার ক্ষোভের মুখে এই বিষয়ে চঞ্চলের মতামত জানার পক্ষে মত দেন রুম্মান।

তবে এই ভাগ-বাঁটোয়ারার সঙ্গে ভিসির কোনো বিষয় যুক্ত নেই বলে দাবি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেত্রী রেদওয়ানা রহমান রুম্মান।

তিনি বলেন, ‘সংগঠন চালাতে বিভিন্ন সময় নানা টাকা লেনদেনের ঘটনা ঘটে। কর্মসূচি পালনে এরকম টাকা পয়সা খরচ হয়। সবাইকে ডিস্ট্রিবিউট করা হয়। তবে এর সঙ্গে ভিসি ম্যামের কোনো সম্পর্ক নাই। এরকম ঈদ সালামি আমরা প্রতিবছরই পাই।’

এ বিষয়ে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ আন্দোলনের মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারার বিষয়টি আগেও গণমাধ্যমে এসেছে। ছাত্রলীগ সেই টাকার ভাগ নিয়েছে ও কর্মীদের কাছে ভাগ করে দিয়েছে সে বিষয়ে আগেও নানা প্রমাণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ফলে এই স্ক্রিনশটগুলো ভাইরাল হওয়ার মধ্য দিয়ে পুরনো প্রমাণগুলোই আরও জোরালো হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *