ইরানের সেনাবাহিনীর নৌ ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল হোসেইন খানযাদি পানির তলদেশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার প্রযুক্তি অর্জন এবং ব্যাপক পরিমাণে এ ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের খবর দিয়েছেন। তিনি তেহরানের বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি বিভাগ পরিদর্শনে গিয়ে এ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে ইরানের সেনাবাহিনীর নৌ ইউনিট সাগরতল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে সক্ষম এবং এ সংক্রান্ত সরঞ্জাম ব্যাপক সংখ্যায় তৈরি করা হচ্ছে। রিয়ার অ্যাডমিরাল হোসেইন খানযাদি ইরানে চীন ও রাশিয়ার ত্রিদেশীয় সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে আগামী দুই মাসের মধ্যে যৌথ মহড়া শুরু হবে এবং তেহরান সফররত চীন ও রাশিয়ার নৌ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
ভৌগোলিক দিক দিয়ে ইরান গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকার কারণে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষায় ইরানের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ইরানের সেনাবাহিনীর নৌ ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল হোসেইন খানযাদি বলেছেন, চীন ও রাশিয়ার মতো বৃহৎ দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা ও মহড়া ইরানের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সমুদ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইরানের নৌ বাহিনীর প্রধান নীতি। এ ব্যাপারে ইরান দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং এ লক্ষে সমুদ্রের তলদেশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য যুদ্ধ সামগ্রী তৈরিতে ইরানের সক্ষমতার ব্যাপারে কেউ যেন সন্দেহ প্রকাশ না করে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী জাতীয় দিবস ও মার্কিন গুপ্তচরবৃত্তির আখড়া দখলের বার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশ থেকে আগত হাজার হাজার শিক্ষক ও ছাত্রদের এক সমাবেশে বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি অর্জন করা থেকে ইরানকে বিরত রাখার জন্য আমেরিকা ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, ইরানের তরুণ বিজ্ঞানীরা অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম দুই হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি অর্জন ইরানের অনেক বড় সামরিক সাফল্য। এ সাফল্যের মাধ্যমে ইরান অনেক বড় প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলেছে। বিশেষ করে নৌ শক্তিতে ইরান ব্যাপক সাফল্য অর্জন করায় শত্রুদের সব হিসাব নিকাশ পাল্টে গেছে।

মার্কিন সাময়িকী ‘ফরেন পলিসি’ লিখেছে, পারস্য উপসাগরে ইরানকে মোকাবেলার ক্ষমতা মার্কিন নৌ বাহিনীর নেই। এতে আরো বলা হয়েছে, যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে আমেরিকা আগের মতো আধিপত্য ধরে রাখতে পারবে না এবং বর্তমান অবস্থায় বোঝা যায় গত কয়েক দশক ধরে মার্কিন আধিপত্যের অবসান ঘটেছে। এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে নৌ শক্তিতে ইরানের শক্তিশালী অবস্থানকে সবাই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। সূত্র : পার্সটুডে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *