• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম

সশস্ত্র বাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও গৌরব সমুন্নত রাখবে: প্রধানমন্ত্রী

Reporter Name / ২৬৩ Time View
Update : রবিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২১

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রেখে দেশের গৌরব সমুন্নত রাখবে। গতকাল রবিবার বিকালে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২১’ এর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আরো বলেন, ‘আপনারা (সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা) যেন শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতায় সর্বত্র প্রশংসিত হতে পারেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রেখে দেশের গৌরব সমুন্নত রাখতে পারেন সেটাই কামনা করি।’

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্ধসঢ়;যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির শুরুতে দেশের সকল সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে পৃথক পৃথকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পু¯পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এর আগে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে এসে পৌঁছলে তাঁদেরকে স্বাগত জানান তিন বাহিনী প্রধানগণ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার। মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে গমন করেন। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং মহাপরিচালকবৃন্দ। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী ভিটিসির মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্ধারিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী স্বশরীরে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদের হাতে সম্মানী চেক এবং উপহার তুলে দেন। এছাড়া ৫ জন সেনা, ২ জন নৌ এবং ১ জন বিমান বাহিনী সদস্যদের ২০২০-২০২১ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা যাতে কোনভাবে ব্যাহত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবসে আমি এ’টুকুই চাই, দেশের এই অগ্রযাত্রা যাতে কোন রকম ব্যাহত না হয়। বাংলাদেশ যেন সারাবিশ্বে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে। প্রতিটি বাঙালি পৃথিবীর যেখানেই যাক না কেন যেন মাথা উঁচু করে বলতে পারে আমরা বিজয়ী জাতি, উন্নত জাতি। আমরা নিজেদের দেশকে গড়ে তুলেছি একটা সম্মানজনক অবস্থানে।

৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের নিকট আত্মীয়সহ প্রায় ৭৫ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীগণ সংবর্ধনায় যোগ দেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার সহ উর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এর পরে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনী প্রধান এবং বিমান বাহিনী প্রধান স্ব-স্ব বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের পরিবারবর্গের সম্মানার্থে পৃথক পৃথক সংবর্ধনার আয়োজন করেন।

এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান আগামী ২৩ নভেম্বর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা/তাঁদের উত্তরাধিকারীদের পরিবারবর্গের সম্মানার্থে সংবর্ধনার আয়োজন করবেন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে সেনাকুঞ্জে অপরাহ্নে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই সংবর্ধনায় সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাগণ ছাড়াও দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ ও স্থানীয় দূতাবাসসমূহের বিদেশী কূটনৈতিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিটিসিতে সংযুক্ত হন এবং তিনি তাঁর বক্তৃতায় আরো বলেন, রূপকল্প-২০২১ এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আমরা উন্নয়নশীল দেশ হবার ক্ষেত্রে তিনটি সূচকেই সাফল্য অর্জন করেছি। আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতির মানদন্ডে বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছি।

বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। তিনি বলেন, আমরা দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশের নীচে নামিয়ে এনেছি এবং আর্থ-সামাজিক সকল সূচকে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই অঞ্চলের জনগণকে একটি সুন্দর আগামী উপহার দেয়ার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এর আগে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ অতিথি হিসেবে জাতীয় সংসদের স্পীকার সেনাকুঞ্জে এসে পৌঁছালে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) সস্ত্রীক তাঁকে স্বাগত জানান।

সংবর্ধনায় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী ও মন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিগণ, প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিগণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশী রাষ্ট্রদূতগণ, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানগণ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মূখ্য সচিব, সংসদ সদস্য (ঢাকা এলাকার) প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তাগণ, বাহিনীত্রয়ের প্রাক্তন প্রধানগণ, ২০২১ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত ও একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারীগণ, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/তাঁদের উত্তরাধিকারীগণ, উচ্চপদস্থ অসামরিক কর্মকর্তাগণ এবং তিন বাহিনীর চাকুরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ।

উক্ত অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয় এবং অপরাহ্ন/সন্ধ্যায় বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২১’ উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গণমাধ্যমেও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে নানামুখী অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশন ২০ নভেম্বর ২০২১ রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান স¤প্রচার করে। বাংলাদেশ বেতার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘বিশেষ দূর্বার’ অনুষ্ঠান স¤প্রচার করে। ২১ নভেম্বরের পরে বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহ ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠানটি এবং বেসরকারী রেডিও চ্যানেলসমূহ বিশেষ দুর্বার’ অনুষ্ঠানটি পর্যায়ক্রমে সম্প্রচার করবে।

এদিকে, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও, সশস্ত্র বাহিনীর আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার (অনলাইন ভিত্তিক) আয়োজন করা হয়। এছাড়া, ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ বেলা ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটে নোঙ্গরকৃত অবস্থায় রাখা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category


[cvct title=”COVID-19 Global Stats” label-total=”Total Cases” label-deaths=”Death Cases” label-recovered=”Recovered Cases” bg-color=”” font-color=””]

[cvct title=”Coronavirus Stats” country-code=”BD” label-total=”Total Cases” label-deaths=”Death Cases” label-recovered=”Recovered Cases” bg-color=”” font-color=””]



Fact News

Fact News theme is a complete magazine theme, excellent for news, magazines, publishing and review sites. Amazing, fast-loading modern magazines theme for personal or editorial use. You’ve literally never seen or used a magazine that looks or works like this before.

https://slotbet.online/