• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম

অভিজাত ফ্ল্যাটে তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বসুন্ধরার এমডির বিরুদ্ধে মামলা

Reporter Name / ৩৮ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১

সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান- ১ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান ওরফে মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাখ টাকা ভাড়া ওই বাসায় একাই থাকতেন তিনি।

পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, মোসারাত জাহানের বাড়ি কুমিল্লায়। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান। মেয়েটির পরিবার কুমিল্লায় থাকেন। ওই ফ্ল্যাটে তিনি একাই থাকতেন। ওই তরুণী রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে মোসারাত জাহানের পরিচয় ছিলো। তিনি ওই ফ্ল্যাটে যাতায়াত করতেন বলেও তথ্য পেয়েছেন তারা।

তিনি বলেন, মোসারাত জাহান রোববার তার বড় বোনকে ফোন করে বলেন, তিনি ঝামেলায় পড়েছেন। এ কথা শুনে তার বড় বোন সোমবার কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসেন। সন্ধ্যার দিকে ওই ফ্ল্যাটে যান তিনি। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলেও বোন দরজা খুলছিলেন না। এরও কিছুক্ষণ আগে থেকে বোনের ফোন বন্ধ পাচ্ছিলেন। পরে বাইরে থেকে ‘লক’ খুলে ঘরে ঢুকে বোনকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন। পরে তিনি বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি জানান। তখন পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং মোসারাতের ব্যবহৃত ডিজিটাল ডিভাইসগুলো জব্দ করেছে।
সোমবার গভীর রাতে ওই তরুণীর বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে গুলশান থানায় আত্নহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। এতে একমাত্র আসামি করা হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে। পুলিশের ধারণা সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল সোয়া ৪টায় মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এক লাখ টাকা ভাড়ায় মাস দু-এক আগে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মোসারাত। এর আগে মুনিয়া বনানীতে থাকতেন।

বাদী মামলার এজাহারে বলেন, মোসারাত জাহান (২১) মিরপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। দুই বছর আগে মামলার আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের (৪২) সঙ্গে মোসারাতের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তাঁরা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় দেখা করতেন এবং সব সময় মোবাইলে কথা বলতেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালে মোসারাতকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে আসামি রাজধানীর বনানীতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। সেখানে তাঁরা বসবাস করতে শুরু করেন। ২০২০ সালে আসামির পরিবার এক নারীর মাধ্যমে এই প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারে। এরপর আসামির মা মোসারাতকে ডেকে ভয়ভীতি দেখান এবং মোসারাতকে ঢাকা থেকে চলে যেতে বলেন। আসামি কৌশলে (বাদী নুসরাতের) বোনকে কুমিল্লায় পাঠিয়ে দেন এবং পরে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন।এজাহারে আরও বলা হয়, সবশেষ গত ১ মার্চ আসামি মোসারাতকে প্ররোচিত করেন। তিনি বাসা ভাড়া নিতে বাদী নুসরাত ও তাঁর স্বামীর পরিচয়পত্র নেন। ফুসলিয়ে তিনি মোসারাতকে ঢাকায় আনেন। তিনি গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কে বাসা (ফ্ল্যাট-বি-৩) ভাড়া নেন। ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে আসামি ও তাঁর (বাদীর) বোনের স্বামী-স্ত্রীর মতো ছবি তুলে তা বাঁধিয়ে রাখে। আসামি বাসায় আসলে কক্ষটি পরিপাটি করে রাখা হতো।

বাদী নুসরাত এজাহারে বলেন, বোনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামি তাকে বিয়ে করে বিদেশে স্থায়ী হবে। কারণ, দেশে থাকলে আসামির বাবা-মা আসামিকে কিছু না করলেও তাঁর বোনকে মেরে ফেলবেন। ১ মার্চ থেকে আসামি মাঝে মাঝে ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করতেন।বাদী এজাহারে বলেন, ২৩ এপ্রিল মোসারাত তাঁকে ফোন করেন। মোসারাত তাঁকে বলেছেন, আনভীর তাঁকে বকা দিয়ে বলেছেন, কেন তিনি (মোসারাত) ফ্ল্যাট মালিকের বাসায় গিয়ে ইফতার করেছেন, ছবি তুলেছেন। ফ্ল্যাটের মালিকের স্ত্রী ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছেন। এ ছবি পিয়াসা দেখেছেন। পিয়াসা মালিকের স্ত্রীর ফেসবুক বন্ধু। এখন পিয়াসা তাঁর মাকে সবকিছু জানিয়ে দেবেন। তিনি (আসামি) দুবাই যাচ্ছেন, মোসারাত যেন কুমিল্লায় চলে যান। আসামির মা জানতে পারলে তাঁকে (মোসারাতকে) মেরে ফেলবেন।
এজাহারে নুসরাত বলেন, দুদিন পর ২৫ এপ্রিল মোসারাত তাকে ফোন করেন। ওই সময় তিনি কান্নাকাটি করে বলেন, আনভীর তাকে বিয়ে করবেন না, শুধু ভোগ করেছেন। আসামিকে উদ্ধৃত করে মোসারাত বলেন, আসামি তাক বলেছেন, তিনি (মোসারাত) তার শত্রুর সঙ্গে দেখা করেছেন। মোসারাতকে তিনি ছাড়বেন না। মোসারাত চিৎকার করে বলেন, আসামি তাকে ধোঁকা দিয়েছেন। যেকোনো সময় তার বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাঁরা (বাদী নুসরাতের পরিবার) যেন দ্রুত ঢাকায় আসেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, নুসরাত তার আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে দুপুর ২টার দিকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় রওনা দেন। আসার পথে বারবার মোসারাতের ফোনে ফোন করেন, কিন্তু তিনি আর ফোন ধরেননি। গুলশানের বাসায় পৌঁছে দরজায় নক করলে ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে নিচে নেমে আসেন। তাঁরা নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষ থেকে বাসার ইন্টারকমে ফোন করেন। পরে ফ্ল্যাট মালিকের নম্বরে ফোন দিলে মিস্ত্রি এনে তালা ভেঙে ঘরে ঢোকার পরামর্শ দেন। মিস্ত্রি ডেকে তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার পর তিনি দেখেন, তাঁর বোন ওড়না পেঁচিয়ে শোয়ার ঘরের সিলিংয়ে ঝুলে আছেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশ এসে ওড়না কেটে মোসারাতের মৃতদেহ নামায়। আলামত হিসেবে আসামির সঙ্গে ছবি, আসামির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে লেখা ডায়েরি ও তার ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় পুলিশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category


[cvct title=”COVID-19 Global Stats” label-total=”Total Cases” label-deaths=”Death Cases” label-recovered=”Recovered Cases” bg-color=”” font-color=””]

[cvct title=”Coronavirus Stats” country-code=”BD” label-total=”Total Cases” label-deaths=”Death Cases” label-recovered=”Recovered Cases” bg-color=”” font-color=””]



Fact News

Fact News theme is a complete magazine theme, excellent for news, magazines, publishing and review sites. Amazing, fast-loading modern magazines theme for personal or editorial use. You’ve literally never seen or used a magazine that looks or works like this before.

https://slotbet.online/